admin || মুক্ত কলম সংবাদ
প্রকাশিত: ১১ অক্টোবর, ২০২২ ৫:০২ অপরাহ্ণ
মোঃ মজিবর রহমান শেখঃ ঠাকুগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে ঐ পরিবারকে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ৪ সেপ্টেম্বর দায়েরকৃত সাকিল হত্যা মামলার প্রধান আসামী করায় বিভ্রান্তিকর পরিবেশ বিরাজ করছে এলাকায়। চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামী করায় তিনি ঘটনার পর থেকে ইউনিয়ন পরিষদ অনুপস্থিত থাকায় জনসাধারণের কাজ-কর্ম ব্যহত হচ্ছে।
এলাকাবাসীদের সূত্রে জানা গেছে, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের হলদিবাড়ী জাম্মে মসজিদের ইমাম মাওলানা দেলোয়ার হোসেন গত ১৯ আগস্ট শুক্রবার জুম্মা নামাজের খুতবায় একটি বয়ান উচ্চারণকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট ঘটনায়, পরবর্তী শুক্রবার জুম্মা নামাজে মুসল্লিদের মাঝে আরও বির্তক বেড়ে যায়। পরে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জুম্মার নামাজ শেষে এলাকার কিছু মুসল্লি ও সাঈদ আলমের মাঝে বাক-বিতন্ডার সৃষ্টি হয়। ঐ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হলদিবাড়ী গ্রামের মরহুম শামশুল আলম অরফে কশিরতের ছেলে সাঈদ আলম ও তার ভাই সাকিল আহাম্মেদ ও তার লোকজন মিলে পরদিন শনিবার সকাল ১০ টায় হলদিবাড়ী হাটে অপর পক্ষের লোকজনের সাথে আবারো বাক-বিতন্ডার সৃষ্টির এক পর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এ সময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও তার গ্রাম্য পুলিশদের সঙ্গে নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে ছুটে যান।এ ঘটনায় প্রতিপক্ষের মারপিটের আঘাতে সাকিল আহাম্মেদ আহত হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে রেফার্ড করে। পরে তার পরিবারের লোকজন তাকে দিনাজপুর এম রহিম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় পরদিন সে মারা যায়।
এঘটনায় নিহতের বড়ভাই সাইদ আলম বাদী হয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকে জড়িয়ে প্রধান আসামী করে ২০ জনের নাম উল্লেখ্য করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। রফিকুল ইসলাম চেয়ারম্যানের বাবা আলহাজ্ব আবুল হোসেন মাষ্টার জানান, মামলার বাদী সাঈদ আলম এলাকার নিরিহ লোকজনদের বিভিন্ন ভাবে হুমকী ও ভয় ভীতি দেখিয়ে পুলিশ ও আদালতে মিথ্যা সাক্ষীদেয়ার জন্য বল প্রয়োগ করে আসছে। ভানোর ধনিরহাট গ্রামের হামিদুর রহমান জানান, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ভানোর ইউনিয়ন শাখার দুই বারের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম গত ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত্ব ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ব্যাপক জনপ্রিয়তায় ৬ নং-ভানোর ইউনিয়নবাসী তাকে সাড়ে নয় হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত করে বিজয় করেছে।
তিনি দ্বায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে একটি মহল তার পিছনে লেগে রয়েছে। তাকে কি ভাবে বিপদে ফেলে ভানোর ইউনিয়ন থেকে তারিয়ে দেওয়া যায় সেই গভীর ষড়যন্ত্র করতে মরিয়া উঠে পড়ে লাগে। ষড়যন্ত্রকারীরা আগের মতো এই ইউনিয়নে বিশৃঙ্খল পরিবেশ ও অরাজগতা সৃষ্টি করে কিভাবে লুটপাট করতে পারবে সেই ষড়যন্ত্র আকতে থাকে। ঐ মহলটি ভানোর ইউনিয়নের মানুষের উপর হামলা, তুচ্ছ ঘটনা ঘটিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে সাধারণ মানুষকে কিভাবে হয়রানি করা যায়, এই ছিল তাদের মুল পরিকল্পনা।
গত ইউপি নির্বাচন চলাকালে তারা বলেছিল, ভোট করাতো দুরের কথা, রফিকুল ও তার কর্মীরা বাড়ীতে থাকতে পারবে না, বলে নানা ধরনের হুমকী দেওয়া হয়েছে। রফিকুল চেয়ারম্যান একজন উদার ও জনদরদী, তিনি প্রতিনিয়ত অসহায় গরিব দুখী মানুষের পাশে থেকে সাহায্য সহযোগীতা করেছেন। এমন একজন গরিব সেবক মানুষ কখনো হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকতে পারেনা। সাপটি ময়মনসিংহ পাড়ার আব্দুর রশিদ জানান, মামলার বাদী সাঈদ আলম সংঘর্ষের ঘটনাটি ধারণকৃত ভিডিও সাথে পূর্বের ভিডিও ও ছবি সংযুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকের তার ব্যবহৃত আইডি থেকে ছাড়িয়ে ঘটনাটি বিভান্তকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। অপরদিকে, ভানোর ডালিম পাড়ার আব্দুল গনি বলেন, মামলার বাদী সাঈদ আলম ও তার লোকজন মিলে ইতিমধ্যে মামলার অভিযুক্ত আসামী বিশ্রামপুর গ্রামের আয়শা বেগম ও আব্দুল কাদেরের বাড়ীতে হামলা করে এবং বিভিন্ন লোকজনকে এই মামলায় সম্পৃক্ত করার হুমকী অব্যহত রেখেছে।
এদিকে, বিশ্রামপুর গ্রামের সলিম উদ্দীন জানান, উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকে প্রধান আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার বাদী সাঈদ আলম জানান, আমি আমার ভাইয়ের হত্যার সুষ্ট তদন্ত সহ দোষি ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী করছি। এছাড়াও তিনি আরো বলেন, আমি কোন আসামীর বাড়ীতে হামলা কিংবা কোন স্বাক্ষীকে ভয় ভিতি বা হুমিক প্রদর্শন করিনি। বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি খায়রুল আনাম বলেন, বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে বর্তমানে মামলাটি ঠাকুরগাঁও ডিবি ব্রাঞ্চে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঠাকুরগাঁও ডিবি ব্রাঞ্চে তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা এস,আই সুলতান আলী জানান, গতকাল সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থে গিয়ে বাদী ও সাক্ষীদের জবান বন্দী গ্রহণ করা হয়।