ডা: নুরুল হকবিরামপুর প্রতিনিধি: দিনাজপুর জেলার বিরামপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড চাঁদপুরে মাহালিদের বসতি । রাস্তার পাশে বসে মাহালি সম্প্রদায়ের নারী পুরুষেরা বাঁশের খাঁচি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে।
মধু মাস জ্যৈষ্ঠে বাজারে আম লিচু উঠতে শুরু করেছে। বাজারে ভরে উঠেছে লিচুতে । এখন আম লিচুর বহনকারী হিসেবে বাঁশের খাঁচির কদর বেশি থাকায় মাহালী সম্প্রদায়ের নারী পুরুষেরা বাঁশের খাঁচি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে। বছরে বেশিরভাগই মাসেই তাদের হাতে কাজ থাকে না। মধু মাস জ্যৈষ্ঠে আম লিচুর খাঁচি তৈরিতে এখন মাহালিদের কর্মব্যস্ততা বেড়ে গেছে।
চলতি আম লিচুর মৌসুমে লিচু ব্যবসায়ীদের বাঁশের খাঁচির প্রয়োজন অত্যাবশ্যকীয়। এছাড়াও জেলা শহরে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে লিচু পাঠানোর জন্য বাঁশের খাঁচির বেশ প্রয়োজন হয় । তাঁরা ভালো মানের খাঁচির জন্য চলে আসে মাহালি পাডায়।
দিনাজপুরের লিচু মুম্বাই, মাদ্রাজি , মজাফফরি, বেদনা ,চায়না থ্রি সারাদেশেই চাহিদা বেশি। আম লিচুর চাহিদা থাকায় দূরদূরান্তে নিজ নিজ বন্ধু বান্ধব সহ আত্মীয়স্বজনের কাছে মধু মাসে আম লিচু পাঠানো অত্র এলাকায় একটি নিয়মে পরিণত হয়েছে। আবার অনেকে নিজ নিজ দপ্তরে কর্তা ব্যক্তিদের খুশি করার জন্য দিনাজপুরে আম লিচু পাঠিয়ে থাকেন । এ কারণেই এ সময় আম লিচু বহনের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম বাঁশের তৈরি খাঁচি। এছাড়াও আম লিচু ব্যবসায়ী মহাজনদের কাছেও খাঁচির কদর বেশি।
বছরে অন্য সময় মাহালিদের তেমন কোন কাজ থাকে না। মধুমাসে আম লিচুর মৌসুমে খাঁচির চাহিদা থাকায় এখন কাজের চাপে তাদের দম ফেলার ফুরসত নেই। এই সময়ের আয় দিয়ে বছরের বেশিরভাগ সময় পার করতে হয়। মাহালী জোসেফ, বাহামনি, ঝুমকি দিলীপ ,সুজাতা টুডু জানায়, বর্তমানে বাঁশ বাগান বিলুপ্তির পথে। বাঁশ সংগ্রহ করা তাদের পক্ষে খুব কষ্টকর । বাঁশের দামও বেশি। একটি বাঁশ ক্রয় করতে দাম পড়ে ১শত৮০ টাকা থেকে ২শত টাকা। একটি বাঁশ দিয়ে ছোট বড় পাঁচ থেকে ছয়টি খাঁচি তৈরি হয়।
একেকটা খাঁচি বিক্রয় হয় ছোট বড় হিসাবে ৫০ থেকে ১শত টাকা। সারাদিনে ছয় থেকে সাতটি খাঁচি তৈরি করা যায়। তাছাড়া প্লাস্টিকের দাপটে পূর্বের মতো বাঁশের পণ্যের চাহিদা নেই তবুও শত কষ্টে বাপ-দাদার পৈতৃক পেশা ধরে রেখেছে মাহালি সম্প্রদায়।