আবুল কাশেম, ভোলা জেলা প্রতিনিধিঃ ভোলা-পটুয়াখালী (ভায়া- গলাচিপা) সেতু নির্মান ত্বরান্বিত করার জন্য বগা সেতু বাস্তবায়নে- সেতু উপদেষ্টার সাথে গত ২৯/০৪/২০২৫ ইং তারিখে বাউফল উন্নয়ন ফোরামের বৈঠক হয়। বগা সেতু নির্মান করার পর ভোলা জেলার চরফ্যাসন উপজেলা দিয়ে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার সড়ক সংযোগের চাহিদা বেড়ে যাবে।তাতে ভোলা জেলার দক্ষিণের মানুষ খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আঞ্চলিক সড়কে উঠতে পারবে। আর ভোলা জেলার অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-সংঘাতের কারনে যারা ভোলা-বরিশাল সেতুতে উঠে আঞ্চলিক সড়কে উঠতে নাক ছিটকানী ভাব বোধ করবে তারাও চরফ্যাসন-গলাচিপা সেতু দিয়ে বগা সেতু পার হতে পারবে এবং ঢাকার গুপ্ত গন্তব্য ও দূর্বৃত্তায়ন মুক্ত গন্তব্য দ্রুত ও নিরাপদ করতে পারবে। তাই বগা সেতুও ভোলা জেলার মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বগা সেতু বাউফল, দশমিনা ও গলাচিপার পনের লক্ষ বাসিন্দা ও ভোলা জেলার চরফ্যাসন, মনপুরা ও লালমোহনের পনের লক্ষ বাসিন্দা সমেত মোট ত্রিশ লক্ষ বাসিন্দার উপকারে কাজে লাগবে। তাই বগা সেতু নির্মানের পাশাপাশি চরফ্যাসন-গলাচিপা সেতু নির্মানের জন্যও সেতু মন্ত্রকের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। যাতে চরফ্যাসন-গলাচিপা সেতু বা ভোলা-পটুয়াখালী সেতুটি দশম চীন মৈত্রী সেতু হতে পারে। বাউফল উপজেলার এল:জি:ই:ডি: সূত্রে জানা গেছে যে, যে কোন ব্রীজ-ই দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ।
পটুয়াখালীর লোহালিয়া নদীর উপর বগা সেতু নির্মিত হবে। ঐ নদীটি বাউফল, দশমিনা ও গলাচিপা উপজেলাকে পটুয়াখালী জেলা শহর থেকে আলাদা করেছে। পটুয়াখালী জেলার অভ্যন্তরীণ তিন উপজেলাবাসীর যাতায়াতের একমাত্র ব্যবস্থা বগা ফেরি। যুগযুগ ধরে এখানে একটি সেতু নির্মাণের দাবি গোটা দক্ষিনাঞ্চলের স্থানীয় বাসিন্দাদের। অতীতের জনপ্রতিনিধিরা বগা সেতু নির্মানের জন্য বারবার আশ্বাস দিলেও কাজ করেনি। বর্তমানের প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে— অবশেষে ১৫ লাখ মানুষের স্বপ্নের ও ত্রিশ লক্ষ সুবিধা ভোগী মানুষের দরকারী সেতু বাস্তবায়নের পথে এক ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ।
গত মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল, ২০২৫ ইং) রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কার্যালয়ে সেতু নির্মাণ প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. ফাওজুল কবির খানের সাথে সাক্ষাৎ করেন বাউফল উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নেতারা। নেতাদের মাথে যোগাযোগ করা হলে এ বিষয়ে তারা বলেন যে, বগা ব্রীজ তাদের উন্নয়ন রাজনীতির বলিষ্ঠ ভিত্তি। সেতু উপদেষ্ঠা সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছেন– সাম্প্রতিক সময়ে চীনা সরকারের প্রতিনিধি দল স্থানীয়ভাবে বগা সেতুর ফিজিবিলিটি স্টাডি সম্পন্ন করেছেন এবং সড়ক ও জনপথ অধিদফতর ডিপিপি প্রণয়ন কাজ করছেন এবং সরকারের পক্ষ থেকে এটি শুরু করা হয়েছে। ইতিমধ্যে জমি অধিগ্রহণের জন্য বরিশাল বিভাগের সংশ্লিষ্ট দফতরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবহিত হয়েছেন। নবম চীন-মৈত্রী সেতু হিসেবে বগা সেতুর কাজ করবে চীন।
সেতুর বিষয়ে এক বছর আগে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করে। স্থানীয় নেতারা তিন উপজেলার প্রায় ১৫ লাখ মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এই সেতু বললেও বাংলাদেশের পূর্ব-দক্ষিণাঞ্চলীয় আরো পনের লক্ষ লোক ঐ সেতুর সুবিধা ভোগ করার উপযোগী হবে। তাতে উপকার ভোগী স্থানীয় বাসিন্দার সংখ্যা বর্তমানেই ত্রিশ লক্ষাধিক। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের হাজারও যানবাহন চলাচল করে এই পথে। সেতুর অভাবে নিত্য দিনকার ভোগান্তি লক্ষাধিক পথচারীর।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরির অপেক্ষায় থেকে— ঘাটেই মৃত্যু হয় অনেক রোগীর। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য সহজে বাজারজাত করতে পারে না। শিক্ষার্থী ও চাকরিজীবীরা নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে ব্যর্থ হন। এমনকি ব্যাংকিং সেক্টরও অনিরাপত্তায় থাকে এই সেতুর অভাবে। বগা সেতু বাস্তবায়ন হলে দেশের দক্ষিন পূর্বাঞ্চলীয়রা যেসব সুবিধা পাবে তার প্রায় সবই সেতু উপদেষ্টা মহোদয়কে অবহিত করা হয়েছে। তারমধ্যে জাতীয় সড়কের সাথে সরাসরি যুক্ত হবে, ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন গতি আসবে, শিক্ষা সহজিকীকরণ হবে ও পর্যটন শিল্প অগ্রগতি পাবে।
দক্ষিণাঞ্চলের প্রবৃদ্ধির ধারা আরও ত্বরান্বিত করতে এবং দক্ষিণাঞ্চলের মানুষদের দুর্ভোগ লাঘবে বগা সেতু বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট দফতরে বাউফল উন্নয়ন ফোরামের নেতারা মন্ত্রনালয়ে আবেদন কপি জমা দিয়েছে। আবেদনের ব্যাপারে সবাই একটা ভালো ফলাফলের অপেক্ষা করছে — এমনটাই সকলের প্রত্যাশা। এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের পটুয়াখালী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জামিল আক্তার বলেন, ইতিমধ্যে নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করেছে চিনা প্রতিনিধি দল। খুব তাড়াতাড়ি-ই সেতুর কাজ শুরু হবে।