রফিকুল ইসলাম জিলু, ব্যুরো প্রধান ঢাকা: কোরবানির ঈদের পরের দিনও সাভারে সরব হয়ে উঠেছে চামড়া শিল্পনগরী ট্যানারিতে ফিরেছে কর্মচাঞ্চল্য । দূর-দূরান্ত থেকে কাঁচা চামড়া আসা শুরু হয়েছে এখানে। তবে ট্যানারি মালিক ও কর্তৃপক্ষ চামড়ার দাম নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও
চামড়ার দর নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা সরকার নির্ধারিত দাম না পেয়ে লোকসান হচ্ছে বলে দাবি করেছেন একাধিক মৌসুমি ব্যবসায়ী। রোববার (৮ জুন) ঈদুল আজহার দ্বীতিয় দিনে সাভারের তেঁতুলঝড়া ইউনিয়নে হরিণধরা এলাকায় বিসিক চামড়া শিল্পনগরীতে ঘুরে কর্মচাঞ্চল্য দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিসিক শিল্পনগরীতে দেড়শো ট্যানারির মধ্যে ১৪২টি ট্যানারি সচল রয়েছে। গতকাল বিকেল থেকে সেসব ট্যানারিতে রাজধানীসহ পাশপাশের অঞ্চলের কুরবানির পশুর কাঁচা চামড়া প্রবেশ করছে। এছাড়াও ট্যানারির গেটের বাহিরে গড়ে ওঠেছে স্থায়ীভাবে চামড়ার আড়ত। সেই সকল আড়ত মালিকরা তাদের নিজস্ব চাহিদা অনুসারে চামড়া ক্রয় করছেন। কেউ আবার সুযোগ বুঝে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অর্ধেক দামে কুরবানির পশুর চামড়া ক্রয় করছেন।
তবে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের দাবি, এ বছর সরকার নির্ধারিত দামে ট্যানারি মালিক ও আড়তদাররা চামড়ার দাম দিচ্ছে না। এতে লোকসান গুনতে হবে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের। গাজীপুর থেকে ১৬৬ পিস চামড়া নিয়ে সাভারের ট্যানারিতে এসেছেন মৌসুমি ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন। তিনি বলেন, গাজীপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে চামড়া সংগ্রহ করেছি। আকার ভেদে চামড়ার দাম ৭৫০ থেকে ৯০০ টাকা দিয়ে কিনেছি। এরপর আবার ১০ হাজার টাকা গাড়ি ভাড়া। কিন্তু আড়তদাররা দাম বলে ২৫০ টাকা করে। এখন তো আমার সর্বনাশ। অনেক টাকা লোকসান হবে। কিন্তু এখন কী করব? বেলা বাড়ছে, চামড়া নষ্ট হয়ে যাবে। দাম আরও কমতে থাকবে।
মৌসুমি ব্যবসায়ী নাজমুল বলেন, কাঁচা চামড়া নিয়ে আসা মানেই বিপাকে পড়া। ট্যানারি মালিকরা লোক সেট করে রাখে। তাদের মাধ্যমে চামড়া কেনে, আর আমরা যারা চামড়া নিয়ে এসেছি তাদেরই এখন বিপদ। অপরদিকে সালাউদ্দিনের চামড়ার দাম নিয়ে রংপুর হাইটস নামে আড়তের মালিক ইসলাম বলেন, অনেকেই চামড়া নিয়ে আসে। কিন্তু গরমে বা রাস্তায় চামড়া নষ্ট হয়ে যায়। তাই বেশি দাম বলা যায় না। গাজীপুর থেকে যে চামড়াগুলো নিয়ে এসেছে সেগুলো প্রশম ওঠে যাচ্ছে। তাই চামড়ার দাম ২৫০ টাকা করে বলা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এসবি শাহী ট্যানারির সুপারভাইজার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, আমরা প্রায় ৩ হাজার চামড়া ক্রয় করেছি। মূলত চামড়াগুলো ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত দাম পাওয়া যায়। তার বেশি সময় হলে চামড়ার গুনগত মান নষ্ট হতে থাকে এবং দাম কমে যায়। তবে আমরা সরকার নির্ধারিত দামেই চামড়া ক্রয় করেছি।
সোনার বাংলার ট্যানারির মালিক আব্দুল শেখ দুলাল বলেন, এখনো অনেক ট্যানারি মালিক চামড়া ক্রয় করেননি। ঢাকার বাহিরের চামড়া কয়েক দিন পরে আসবে। সেগুলো লবণ দেওয়া থাকবে। সরকার নির্ধারিত দামেই চামড়া ক্রয় করা হচ্ছে এবং হবে।
গেটে বসে চামড়ার হিসাব করা শহীদ সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল সারি সারি ট্রাকে করে চামড়া এসেছে ট্যানারিতে। আজও চামড়া প্রবেশ করেছে। ট্যানারিতে গরুর চামড়া প্রবেশ করেছে ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৫৮১ পিস এবং ছাগলের চামড়া এসেছে ২০ হাজারেরও বেশি।