admin || মুক্ত কলম সংবাদ
প্রকাশিত: ১৪ মে, ২০২০ ৮:১৬ অপরাহ্ণ
মুক্ত কলম বক্স অফিস সিঙ্গাপুরঃ সিঙ্গাপুরে সুস্থ হওয়া প্রবাসীদের রাখা হয় যেখানে অনেকেই গুজব ছড়াচ্ছে যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়েছে তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সরকার থেকে মোটা অংকের টাকা দেওয়া হবে এসব সবই গুজব। তবে যারা করোনাভাইরাস পজিটিভ তাদেরকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে৷ যেন সুস্থ হওয়া প্রবাসীরা পুনরায় করোনা আক্রান্ত না হয় এ কারণেই তাদের সরিয়ে রাখা হচ্ছে দেশটির বিভিন্ন জায়গায়। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়েছেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে আলাপ করে এসব তথ্য জানা গেছে।
এদিকে প্রবাসীরা ধারণা করছে, যারা সুস্থ হচ্ছে তাদেরকে কোথায় রাখা হচ্ছে? তাদেরকে কেন ডরমেটরিতে পাঠানো হচ্ছে না ৷
ডরমেটরিগুলোতে এখনও প্রতিদিন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হচ্ছে। তাই সুস্থদের সেখানে রাখাটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। এ কারণে সরকার তাদের ভাসমান হোটেল ও বিভিন্ন সরকারি অ্যাপার্টমেন্টে রাখা হচ্ছে সূত্রে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সুস্থ হওয়া বাংলাদেশি বলেন, আমি করোনায় পজিটিভ হবার পর আমাকে হাসপাতালে রাখা হয়৷ সেখানে আমার যখন যে লক্ষণ দেখা দেয় তখন সেই ওষুধ দেওয়া হত ৷ আমার জ্বর হলে জ্বরের দিত। সর্দি হলে সর্দির ওষুধ দিতো। এভাবে ৪ দিন পর আমি সুস্থ হয়ে উঠি৷ আমার শরীরে করোনাভাইরাসের কোনো লক্ষণ না থাকায় আমাকে সিঙ্গাপুর এক্সপোতে নিয়ে আসে৷ তিনি বলেন, এক্সপোতে ১৪টি আইসোলেশন আছে। সেখানে আবার করোনাভাইরাস টেস্ট করা হয়। টেস্টে নেগেটিভ রেজাল্ট আসার পর অন্যদের সাথেও আমাকেও আর্মি ক্যাম্পে স্থানান্তর করা হয়। আর্মি ক্যাম্পে ভালোই ছিলাম৷ ১১ দিন পর আবারও সোয়াব টেস্ট করা হয়। এবারও পরীক্ষায় নেগেটিভ রেজাল্ট আসে৷
এ প্রবাসী বলেন, করোনাভাইরাস থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ সুস্থ হতে পেরে মনে সুখ অনুভব করছি৷ তবে তারা আমাকে ডরমেটরিতে না নিয়ে সরকারি ব্লকে নিয়ে এসেছে। জানি না এখানে কতদিন থাকতে হবে৷ তবে আমাদের জন্য সিঙ্গাপুর সরকার যা করছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। যে বা যারা এমন সুন্দর চিকিৎসা সেবা পাবার পরও অভিযোগ করে তাদের নামে পৃথিবীর অর্ধেক লিখে দিলেও তারা খুশি হবে না জানা গেছে, মে মাসের প্রথম ১৩ দিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের ৯৮ ভাগই অভিবাসী কর্মী। এত লোক আক্রান্ত যা সামাল দেওয়া অত সহজ নয়৷ করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা দিতে সরকার হাসপাতালের পাশাপাশি বিভিন্ন অস্থায়ী আবাসন তৈরি করছে৷ এই অস্থায়ী আবাসনগুলো হলো এক্সপো, ভাসমান জাহাজ, তানজং, পাগার টার্মিনাল, আর্মি ক্যাম্প, হোটেল, আবাসিক এলাকা ব্লক। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে বিভিন্ন কার পার্কে অস্থায়ী আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে৷
কারপার্কে অস্থায়ী আবাসনে অবস্থানকারী এক প্রবাসী বলেন, আমাকে যখন কারপার্কে নিয়ে আসে তখন বুঝতেই পারিনি এটা আগে কারপার্ক ছিলো। চারপাশ এমন সুন্দর করে সাজানো গোছানো হয়েছে দেখেই মুগ্ধ হয়ে গেছি। ছোট ছোট রুমে ভাগ করে কার পার্কে আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে৷ প্রতিটি রুমে চারজন করে থাকি। এক বিছানা থেকে আরেক বিছানার দূরত্ব এত বেশি যে খালি জায়গায় শারীরিক ব্যায়াম করতে পারি।
তিনি বলেন, আমার মতে এত অল্প সময়ে হাজার হাজার লোকের জন্য অস্থায়ী আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা এত সহজ নয়। এসব আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য সিঙ্গাপুর সরকার বিভিন্ন এনজিও দিনরাত মেহনত করছে। তাদের এসমস্ত কাজকে সাধুবাদ জানাতে না পারলে আমি অকৃতজ্ঞ ছাড়া কিছুই না৷ অভিবাসীদের জন্য এমন সুন্দর চিকিৎসা ব্যবস্থা ও আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার সিঙ্গাপুর সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ।