admin || মুক্ত কলম সংবাদ
প্রকাশিত: ৭ জুলাই, ২০২৪ ১:১৫ অপরাহ্ণ
ইব্রাহিম আলম সবুজ,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার সিঙ্গারডাবড়ীহাট বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রধান শিক্ষক ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আরিফুল ইসলামকে ৪ঠা জুলাই ২০২৪ ইং তারিখে শোকজ করে গভর্নিং বডিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন রাজারহাট সহকারী জজ আদালত।
নোটিশ প্রাপ্তির তিন দিনের মধ্যে সিঙ্গারডাবড়ীহাট বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও গভর্নিং বডির সদস্য সচিব ভারপ্রাপ্ত অধ্যাক্ষ মোঃ আরিফুল ইসলাম কে জবাব প্রদানের আদেশ দেন।
জানা গেছে উক্ত বিদ্যালয়ের তিনটি শূন্যপদে জনবল চেয়ে সম্প্রতি পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত করে প্রধান শিক্ষক মোঃ আরিফুল ইসলাম। যা এখনো নিয়োগ চুড়ান্ত হয়নি। রোববার ৭জুলাই বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা থাকলেও হঠাৎ করেই অভিভাবকগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ কার্যক্রমের স্থগিতাদেশের আদেশ আসে।
এতে হতবিম্বল হয়ে যান নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীরা সহ সাধারণ ভোটারগন।অপরদিকে কলেজ শাখার গভর্নিং বডির নির্বাচনের তফসিল পরবর্তী সময়ে সিলেকশন হয়েছেন দুইজন অভিভাবক সদস্য।
বিজ্ঞ আদালতের নোটিশ সূত্রে জানা যায়, অভিযোগকারী আব্দুল্ল্যা আল করিম ওরফে রতনকে প্রধান শিক্ষক মনোনয়নপত্র না দেওয়া ও অভিভাবক হিসাবে মৃত ব্যক্তির নাম ২৭৭নংক্রমিক ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা ইত্যাদি অসঙ্গতি এনে আদালতে মামলা করলে আদালত উক্ত নির্বাচন সাময়িক বন্ধের জন্য প্রধান শিক্ষক আরিফুল ইসলাম কে তিন কার্য দিবসের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলেন।
অভিযোগকারী আব্দুল্ল্যা আল করিম রতন চলমান সিংগারডাবড়ীহাট বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখার বিদ্যুৎসাহী আলহাজ্ব আব্দুল ওয়াহেদ মাস্টারের পুত্র ও প্রধান শিক্ষক আরিফুল ইসলামের ঘনিষ্ট সহচর বলে সাধারণ অভিভাবক সদস্যগন সাংবাদিক কে জানান।
নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী অভিভাবক সদস্য জাহাঙ্গীর আলম মঞ্জু বলেন,নির্বাচন প্রচারণার শেষ মূহুর্তে মুঠোফোনে প্রধান শিক্ষক জানান আদালতের আদেশে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। পরেরদিন জানতে পারি আব্দুল্ল্যা আল করিম ওরফে রতন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আদালতে মামলা করেন।
উল্লেখ্যঃ অভিযোগকারী রতন বিদ্যালয়ের তফসিল ঘোষণা, মনোয়নপত্র ক্রয় ও যাচাই-বাছাই কার্যক্রমে প্রধান শিক্ষকের রুমে উপস্থিত ছিলেন,তার উপস্থিত থাকার ছবি ভিডিও ও প্রধান শিক্ষকের রুমে থাকা সিসি ক্যামেরায় সংরক্ষিত রয়েছে।
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারকারী অভিভাবক সদস্য আশা আলী জানান আমার মনোনয়ন পত্র গ্রহন, দাখিল ও প্রত্যাহারের সময়ে আমি আব্দুল্ল্যা আল করিম ওরফে রতনকে প্রধান শিক্ষকের কক্ষেই দেখি। তাহলে নিজেই মনোনয়ন ক্রয় ও দাখিল না করে প্রধান শিক্ষকের যোগসাজশে এই অভিযোগ করেন।
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কার্তিক চন্দ্র রায় বলেন, অভিযোগকারী রতন উল্লেখ করেন তিনি মনোনয়নপত্র নিতে পারেননি।তার এই অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন বানোয়াট,এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে তার অত্যান্ত গভীর সম্পর্ক। তিনি সবসময় তফসিল ঘোষণা থেকে শুরু করে বর্তমান কার্যক্রম পর্যন্ত পুরোপুরি জরিত। তার মিটিংয়ে থাকা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখনো দৃশ্যমান। তার বাবা আলহাজ্ব আব্দুল ওয়াহেদ সরকার চলমান কমিটির বিদ্যুৎসাহী সদস্য। দীর্ঘদিন তারা কমিটিতে সমন্বয় করে বিদ্যালয় পরিচালনা ও নিয়োগ বাণিজ্য করে আসছে। যখন আমরা ভোট করছি,শিক্ষার্থীর অভিভাবকগণ ভোট দিতে প্রস্তুত ঠিক সেই সময়ে আদালতে মামলা করে ভোট বন্ধের এই ষড়যন্ত্রে প্রধান শিক্ষক নিজেই জড়িত।
প্রধান শিক্ষক মোঃ আরিফুল ইসলামের বক্তব্য জানতে মুঠো ফোনে একাধিকবার কল করলে তিনি ফোন বন্ধ করে রাখেন।এবিষয়ে রাজারহাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রব বলেন,আদালতের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আমার জানা নেই।
গভর্নিং বডির নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার ও উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলম সরকার বলেন আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় রোববার ৭জুলাই নির্বাচন অনুষ্ঠান হবে না।অভিযোগে মনোনয়ন পত্র ক্রয় করতে না পারা ও মৃত ব্যক্তি ভোটার তালিকায় থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এসব বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিষয় বলে জানান।