admin || মুক্ত কলম সংবাদ
প্রকাশিত: ১০ মে, ২০২৩ ৫:০৬ অপরাহ্ণ
উপজেলা প্রতিনিধি, সাভার ঢাকা: চাঁদা না দেওয়ায় ব্যবসায়ীসহ একই পরিবারের ৫ জনকে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করার ঘটনায় সাভার পৌর ছাত্রলীগ নেতাসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে আসামিরা। মামলার দুই দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারে নি পুলিশ। আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন ওই ব্যবসায়ী পরিবার।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাভার পৌর ছাত্রলীগ নেতা মাসুম দেওয়ান ওরফে মুরগী মাসুম ছাত্রলীগের পদ পেয়ে একটি শক্তিশালি বাহিনী গঠন করেন। এই বাহিনীটি প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজি করে আসছিল। গত ৬ মে শনিবার সাভারের আনন্দপুর বিসমিল্লাহ ওয়াশ কারখানায় চাঁদা দাবি করে মাসুম দেওয়ান ও তার সহযোগীরা। যদিও গত ১ মাস ধরে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন তারা। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে শনিবার বিসমিল্লাহ ওয়াশ কারখানার স্বত্বাধিকারী ইউসুফ আলী চুন্নু (৪৫) সহ তার পরিবারের ৫ সদস্যকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেন। পরে ফাঁকা গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে কারখানা থেকে সাড়ে ৩ লাখ ও ভুক্তভোগী একজনের কাছ থেকে ৮৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনার দিনই অভিযোগ দায়ের হলেও দুই দিন পর মামলা রেকর্ড হয়।
মামলার আসামি হলো- সাভারের নামাগেন্ডা এলাকার হোসেন আলীর ছেলে ও সাভার পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি পদ থেকে সদ্য বহিষ্কৃত মাসুম দেওয়ান ওরফে মুরগী মাসুম (২৫), একই এলাকার ইমান আলির ছেলে আলমগীর ওরফে টেন্ডার আলমগীর (৩০), চাপাইন এলাকার সোহেল রানা ওরফে ধর্ষণ সোহেল (৩৩), নামাগেন্ডা এলাকার হাবু মিয়ার ছেলে নাদিম দেওয়ান ওরফে গুন্ডা নাদিম (২৪), উলাইল এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলে টিপু ওরফে বালু টিপু (২৮), কাতলাপুর এলাকার বাবু ওরফে রড বাবু (২৮), একই এলাকার পলাশ ওরফে খাটা পলাশ (৩০), মজিদপুর এলাকার পাবেল ওরফে চাঁদাপাভেল (৩৫), নামাগেন্ডা এলাকার হানিফের ছেলে সজীবসহ (২৪) অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১২ জন।
মামলা দায়েরের পর বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মাসুম দেওয়ানকে অস্থায়ী বহিষ্কার করে। তবে আসামিরা অপরাধ কর্মকান্ডে পারদর্শী দাবি করে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীসহ এলাকাবাসী। আসামিদের ভয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে ভুক্তভোগী পরিবারটি। ভুক্তভোগী ইউসুফ আলী চুন্নু বলেন, আসামিরা খুবই উশৃংখল, তারা যেকোন সময় যেকোন কিছু করতে পারে। নানা ধরনের অপরাধীদের সাথে তাদের সখ্যতা৷ দ্রুত গ্রেপ্তার না হলে আমাদের ওপর যে কোন সময় আবার আক্রমন করতে পারে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, মাসুম দেওয়ান ছাত্রলীগের পদ পাওয়ার পর থেকেই উশৃংখল হয়ে পড়ে। জড়িয়ে পড়ে নানা ধরনের অপরাধ কর্মকান্ডে। তার বিরুদ্ধে এলাকার কেউ কথা বলার সাহস পায় না। তারা আগ্নেয়াস্ত্রধারী ক্যাডার। সবাই তাকে ভয় পায়। এব্যাপারে সাভার মডেল থানার পরিদর্শক ওসি দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে একাধিক অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
এদিকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের এক জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক সংগঠন বিরোধী, শৃঙখলা পরিপন্থী, অপরাধমূলক এবং সংগঠনের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয় এমন কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে মাসুম দেওয়ান (সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, সাভার পৌর শাখা)কে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সাথে কেন তাকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হবেনা তার উপযুক্ত কারনসহ জবাব আগামী ৭ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ এর দপ্তর সেলে জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, নানা অভিযোগে সাভার পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুম দেওয়ানকে অস্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে এবং ৭ দিন সময় বেধে দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তিনি তাকে নির্দোষ প্রমানের সুযোগ পাবে।