admin || মুক্ত কলম সংবাদ
প্রকাশিত: ১৪ মে, ২০২০ ১০:৪৩ পূর্বাহ্ণ
করোনাভাইরাসে আক্রান্তের মৃত্যুর মিছিলে আরও এক চিকিৎসক ও ব্যাংকার। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের পাশাপাশি দেশেও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। একই সঙ্গে লম্বা হচ্ছে মৃতু্যর মিছিলও। এ মিছিলে যুক্ত হলেন আরও একজন চিকিৎসক ও একজন ব্যাংক কর্মকর্তা। এর মধ্যে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার মধ্যরাতে মারা গেছেন অধ্যাপক মেজর (অব.) আবুল মোকারিম মোঃ মহসিন উদ্দিন। তিনি ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগের প্রধান ছিলেন। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে এ নিয়ে দেশে মোট তিনজন চিকিৎসক এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন।
ইবনে সিনা হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক আসরারুল আজিজ জানান, ১০ দিন আগে অধ্যাপক আবুল মোকারিমের নমুনা পরীক্ষায় সংক্রমণ ধরা পড়ে। শুরুতে ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউ সাপোর্টের জন্য চারদিন আগে তাকে সিএমএইচে ভর্তি করা হয়েছিল। ডাঃ আবুল মোকারিমের ছেলে ও পুত্রবধূও কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন জানিয়ে আসরারুল আজিজ বলেন, ‘তারা দুজনও ইবনে সিনা হাসপাতালের চিকিৎসক। তারা রেডিওলজি বিভাগে আবুল মোকারিমের সহযোগী ছিলেন। ধানমন্ডিতে একই বাসায় তারা থাকতেন। আসরারুল আজিজ জানান,
ডাঃ আবুল মোকারিম মেডিনোভা হাসপাতালেও কাজ করতেন। ফলে কোথা থেকে তিনি সংক্রমিত হয়েছেন তা তারা বুঝতে পারছেন না।
‘স্যার সংক্রমিত হওয়ার পর আমাদের রেডিওলজি বিভাগসহ বাকিদের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করেছি। আর কারও সমস্যা ধরা পড়েনি। এ কারণে মনে হচ্ছে আমাদের হাসপাতাল থেকে তিনি সংক্রমিত হননি। এর আগে গত ১৫ এপ্রিল সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মঈন উদ্দীনের মৃতু্য হয় করোনাভাইরাসে। এরপর ৩ মে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক অধ্যাপক কর্নেল (অব.) মোঃ মনিরুজ্জামানও একই কারণে মারা যান।
সিটি ব্যাংকের আরও এক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। এদিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সিটি ব্যাংকের আরেক কর্মকর্তা মারা গেছেন। তার নাম আবু সাঈদ। তিনি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সেন্ট্রাল ক্লিয়ারিং বিভাগের অ্যাসিসটেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি স্ত্রী, একমাত্র মেয়ে ও বাবাকে রেখে গেছেন।
বুধবার সিটি ব্যাংকের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। সিটি ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, সাঈদ গত সপ্তাহে অফিস করেছেন। সাধারণ ছুটির সময় লেনদেন নিরবচ্ছিন্ন রাখতে রাজধানীর তিনটি শাখা পরিদর্শন করে ক্লিয়ারিং বিভাগের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন।
এদিকে মুসতাক কামাল তুহিন নামে আবু সাঈদের এক বন্ধু জানান, বেশ কিছুদিন সর্দি, কাশি এবং জ্বরে ভুগছিলেন তিনি। অবস্থার অবনতি হলে সোমবার দিবাগত রাতে তাকে রাজধানীর একটি হাসপাতালের আইসিইউয়ে নেওয়া হয়। মঙ্গলবার সকালে তিনি মারা যান। এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দুজন ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। তারা দুজনই সিটি ব্যাংকের। এর আগে ২৬ এপ্রিল মুজতবা শাহরিয়ার নামে ব্যাংকটির মানবসম্পদ বিভাগের এক কর্মকর্তা মুগদা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।