মিরু হাসান,স্টাফ রিপোর্টার: বগুড়ার আদমদীঘিতে জায়গার সীমানা নিয়ে আয়রিন সুলাতানা শাপল (৪২) নামের এক প্রতিবেশীকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ সার্জেন্টের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ উঠা ওই পুলিশ সার্জেন্টের নাম মশিউর রহমান (৫২) তিনি বগুড়া সদরের ট্রাফিক পুলিশ সার্জেন্টের দায়িত্বে রয়েছেন এবং আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম মোজাহার হোসেনের ছেলে। গত ৭ জুন শনিবার ঈদের দিন সকাল সাড়ে ৯টায় উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম এলাকার এ ঘটনাটি ঘটে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নিজেই বাদী হয়ে রবিবার বিকেলে পুলিশ সার্জেন্ট মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে নিকটবর্তী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ দায়েরের ৩দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশের জোড়ালো কোন পদক্ষেপ নেই। এদিকে ভুক্তভোগীকে বারবার মিমাংসার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছেন ওই পুলিশ সার্জেন্টের আত্মীয় স্বজনরা। ফলে নানা হুমকি ধামকির মধ্য দিয়ে আতঙ্কে দিনযাপন করেছেন ভুক্তভোগী ও তার পরিবারের লোকজন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম এলাকায় জায়গার সীমানাসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আয়রিন সুলাতানা শাপলার পরিবারের সঙ্গে তার প্রতিবেশী পুলিশ সার্জেন্ট মশিউর রহমানের বিরোধ চলছিলো। গত ৭ জুন শনিবার ঈদের দিন সকালে আয়রিন সুলাতানা শাপলার দুই বছর বয়সী শিশু সন্তান তাকরিম খেলা-ধুলা করছিলো। খেলতে খেলতে তাদের সীমানা থেকে মশিউর রহমানের সীমানায় পৌঁছামাত্র আয়রিন সুলাতানাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে একপর্যায়ে পুলিশ সার্জেন্ট মশিউর রহমান ক্ষিপ্ত হয়ে এলোপাথারী কিল, ঘুষি ও বাঁশের লাঠি দিয়ে তাকে মারধর করে।
তখন আয়রিন সুলতানার বৃদ্ধ বাবা এসে বাধা প্রদান করলে তাকেও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় মশিউর রহমান। আয়রিনের চিৎকারে আশেপাশে লোকজন এগিয়ে আসলে পুলিশ সার্জেন্ট মশিউর রহমান তাকে ভয়ভীতি হুমকি ও বিভিন্ন মামলার ভয় দেখিয়ে চলে যায়। এসময় ৯৯৯ এর ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পুলিশ পরিদর্শন করে। তখন থানার পুলিশের সঙ্গে মশিউরের কথা-কাটাকাটি হয় বলে জানায় স্থানীয়রা। এরপর অহত অবস্থায় আয়রিন সুলাতানাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় রবিবার বিকেলে ভুক্তভোগী নিজেই বাদী হয়ে থানায় পুলিশ সার্জেন্ট মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ দায়েরের তিনদিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত জোড়ালো কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি পুলিশের। ফলে ভয়ভীতি ও হুমকি ধামকির মধ্য দিয়ে আতঙ্কে দিনযাপন করেছেন ভুক্তভোগী ও তার পরিবারের লোকজন।
পুলিশ সার্জেন্ট মশিউর রহমান গণমাধ্যম কর্মীর সাথে মুঠোফোনে অশোভন আচরণ করে জানান, ঘটনার বিষয়ে থানা পুলিশের তদন্ত করতে বলেন। তারা দেখুক কার জায়গায় কে রয়েছে। আর আমার পিছনে আপনাকে কে লাগিয়ে দিয়েছে। পরে সামলাতে পারবেন। মারামারি বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে চলেন।
অভিযোগের তদন্তকারী অফিসার আদমদীঘি থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ ইনতাজুল জানান, এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। খতিয়ে দেখে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।