মুক্ত কলম আর্কাইভ ফিরে দেখা: ৮ বছর আগে ঠাকুরগাঁও এর রানীশংকৈল কলেজের উপাধ্যক্ষের অনিয়মে দিশেহারা শিক্ষকরা। ঠাকুরগাঁও রানীশংকৈল কলেজে দীর্ঘ দিন হতে থাকা একের পর এক নিয়োগ বানিজ্য ! নিয়োগ পরীক্ষা ছাড়াই শিক্ষক নিয়োগ। বেকডেট প্রিন্স হিসেবে এলাকায় যে মানুষটি কয়েকদিন আগেই বরখাস্ত হয়ে বাসায় কান্নাকাটি করে প্রভাষক তাহেরকে নিজের কষ্টের কথা বলেছিলেন, “বাসায় মেয়ে দু’টির দিকে তাকাতে পারিনা, চক্ষু লজ্জায় বাসা হতে বের হতে পারি না, আমার সম্মান রক্ষা কর বন্ধু? মেয়েদের কান্নাকাটি সহ্য করতে না পেরে উপাধ্যক্ষ জামাল ফেরারি হয়ে নেতাদের বাড়ি বাড়ি ঘুরছিলেন আর তখন আমিই একমাত্র পাশে ছিলাম। এখন তার সুদিন এসেছে, তার মিষ্টির জন্য অনেক পিপড়ে বব্ধুর আগমন হয়েছে।
তিনি বলেন অতীত ভুলে এখন দিশেহারা উপাধ্যক্ষ জমাল। এভাবে কষ্টকরে কথাগুলো বললেন- উপাধ্যক্ষ জামালের খুব ঘনিষ্ঠ ঐ কলেজের প্রভাষক তাহের হোসেন। ২৮ মে রবিবার দুপুরে ইতিহাস বিভাগের সিনিয়র প্রভাষক বিশ্বনাথ রায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তাজুল ইসলামকে ২০১৪ সালের এইচ,এস,সি পরীক্ষার বোর্ড কর্তৃক মুল্যায়নের খাতার টাকার (চেক) না পাওয়ার বিষয়ে কথা বলতে গেলে তাৎক্ষনিক ঐ কলেজের উপাধ্যক্ষ জামাল সে সময় প্রধান পরীক্ষক ছিলেন ফলে তিনিও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সামনেই উত্তেজিত হয়ে গায়ে হাত তোলেন। বিষয়টি দেখে সাধারন শিক্ষকরা হতভম্ব হয়ে যান।
পরে প্রভাষক বিশ্বনাথ রায়কে হাতাহাতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপাধ্যক্ষ জামাল ২০১৪ সালে অর্থনীতি ও বানিজ্যিক ভুগোলের প্রধান পরীক্ষকের দায়িত্ব পান এবং প্রায় সাড়ে ৪ হাজার খাতা আমার দ্বারাই নীরক্ষণ করে। আমি গভীর রাত জেগে খাতা নিরীক্ষণ করি অথচ আমার পারিশ্রমিক অর্থাৎ অনারিয়ামের চেক খানা আটকে রাখে এবং তা আমাকে দিতে দিতে অস্বীকার করে, যার ফলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে বিষয়টি জানাতে এসেছিলাম আর এমন সময় উপাধ্যক্ষ জামাল ক্ষিপ্ত হয়ে আমার গায়ে হাত তুলেন। আমার এ অপমান আমি কোন মতেই মেনে নিতে পারছিনা।
আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। প্রতারক জামাল তার শালী রানীশংকৈল মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকুরিতে আছে তাকেও টাকার জন্য নিরীক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন এই প্রতারক উপাধ্যক্ষ জামাল। শালী বিউটির নামে চেকখানি তুলেছে বলে জানালে প্রভাষক বিশ্বনাথ রায় সাথে সাথেই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন- আমি এই উপাধ্যক্ষ জামালকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে দালাল হিসেবে বিভিন্ন কলেজের অনার্স খাতা টাকার বিনিময়ে আনে দিতে দেখেছি। এমনকি নিজের সাবজেক্ট ছাড়াও পরিসংখ্যান ও বিভিন্ন বিষয়ের খাতার প্রধান পরীক্ষক হিসেবে প্রায় খাতা দেখেছেন তা আমি সহ অনেক শিক্ষকরা জানেন। কিন্তু কেউ তার ভয়ে মুখ খুলেন না।
তিনি বলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ে টাকা নিয়ে খাতা আদান প্রদানের একটি প্রতারকচক্র দালাল হিসেবে কাজ করছে। জামাল প্রায় সময় বলেন দিনাজপুর বোর্ড ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে তার শশুর বাড়ির আত্বীয় রয়েছে। যা ঐ কলেজের একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে তিনি (উপাধ্যক্ষ জামাল ) পাবলিক প্রধান পরীক্ষক হিসেবে সারা বছর বিভিন্ন বিষয়ের খাতা দেখেন এমনকি কলেজের পিয়ন দ্বারাও খাতার আংশিক কাজ করান এমনটি বলেন কলেজের বেশ কয়েকজন চতুর্থ শ্রেনির কর্মচারীরা।
কলেজের একজন অনার্স শিক্ষক বলেন- তিনি অনার্সের দেখভাল করা বাবদ প্রায় ১৫ হাজার টাকা প্রতি মাসে জোর করেই গ্রহন করে থাকেন। উপাধ্যক্ষের সাথে বার বার ফোনেযোগাযোগ করলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে ফোন কেটে দেন। এদিকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তাজুল ইসলামের সাথে ফোনে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।