admin || মুক্ত কলম সংবাদ
প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১২:১৬ অপরাহ্ণ
মুক্ত কলম নিউজ ডেক্সঃ পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলায় মাড়েয়া ইউনিউনের আউলিয়াঘাটে ভয়াবহ ট্রাজেডি নেই কোন রাষ্ট্রীয় শোক। নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৮, এখনো নিখোঁজ অনেক। মহালয়ার দিন করতোয়া নদীর আউলিয়া ঘাট থেকে শতাধিক যাত্রী নিয়ে নৌকাটি ছেড়ে যায় বদেশ্বরী মন্দিরের উদ্যেশে। নৌকাটি ছেড়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে ডুবে যায়, ঘটে যায় ভয়াবহ প্রাণহানি।

নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৮, এখনো নিখোঁজ অনেক।
অথচ সরকারের তরফ থেকে আগে থেকেই আউলিয়া ঘাটে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ সরকারি কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়, যাতে করে কোন রকম দুর্ঘটনা সংঘটিত না হয়। দুঃখের বিষয় হল তাদের উপস্থিতিতে ধারণক্ষতার তিনগুণ মানুষ উঠে পড়ে নৌকাটিতে।
পুলিশ,ফায়ার সার্ভিস ও সরকারি লোকজনের দ্বায়ীত্বটা কি ছিল পুরো জাতি আজও বুঝতে পারছে না। নিরিহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠী মরে গেলে দেশের তেমন কোন ক্ষতি হয় না, তাইতো এতোগুলো তাজা প্রাণ চলে গেলেও সরকারের তরফ থেকে কোনরকম ব্যবস্থা নিতে দেখি না। এত এত লাশের মিছিলে হয়তো আপনি আমি আমরাও শিশু, মহিলাসহ কতগুলো তাজা প্রাণ।
এত প্রাণহানির কারণ কী?
কারণ খুঁজতে গিয়ে ডুবে যাওয়া ট্রলার থেকে বেঁচে ফেরা মানুষ, স্থানীয় মানুষ, দমকল, পুলিশ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে জানায়ায় তাতে কয়েকটি বিষয় উঠে এসেছে। প্রথম কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, ঘটনার দিন হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব মহালয়ার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্রচুর মানুষ এসেছিলেন। এর কারণ আউলিয়া ঘাটের অপর পাশেই রয়েছে প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী বদেশ্বরী মন্দির, এবং এটি সনাতন ধর্মের একটি তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত।

স্থানীয় মানুষেরা বলছেন, মহালয়া উপলক্ষে প্রতিবছরই বদেশ্বরী মন্দিরে অনেক বড় অনুষ্ঠান হয় এবং আশপাশের জেলাগুলো থেকে সনাতন ধর্মের ৫০ হাজারের বেশি মানুষ এ অনুষ্ঠানে জমায়েত হন। তাদের নিরাপত্তার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুলিশ, দমকল বাহিনী, আনসার, গ্রাম পুলিশ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের করতোয়া নদীর দুই পাড়ে মোতায়েন করা হয়েছিল।
মানুষের হুড়োহুড়ি এবং অসচেতনতা!
করতোয়া নদীতে ১২ মাস পানি থাকে এবং এই নদীর ওপর কোন সেতু নেই। ফলে নদী পারাপারের জন্য নৌকা এবং ট্রলারই ভরসা। ট্রলার ডুবির ঘটনায় উদ্ধার অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া দমকল বাহিনীর কর্মকর্তা শাজাহান আলী রোববার মুক্ত কলমকে বলেছেন, ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে তারা নদীর পাড়ে কাজ শুরু করেন। উৎসবের দিন হওয়ায় সেদিন ঘাটে প্রচুর মানুষের ভিড় ছিল। কিন্তু তাদেরকে সতর্কতার সাথে নদী পারাপারের জন্য দমকল বাহিনীর কর্মীরা মাইকিং করেছিল।
আলী বলেছেন, খেয়া পার হতে আসা মানুষজনকে বারবার সতর্ক করা হয়েছে, এমনকি হ্যান্ডমাইক নিয়েও কিছুক্ষণ পরপর সতর্ক করা হয়েছে, কিন্তু তারা শোনেননি। আমরা বারবার বলছি। মুখে বলছি, মাইকে বলছি। কিন্তু কে শোনে কার কথা! বলেন মি. আলী। কর্মকর্তাদের কাছে প্রশ্ন ছিল, যখন দেখা গেল নিষেধ সত্ত্বেও একসঙ্গে বেশি মানুষ উঠছে, তখন তাদের থামানো যেত কি না। উত্তরে তারা বলেন, ধর্মীয় উৎসব বলে জোর খাটানোর কথা ভাবা হয়নি।