admin || মুক্ত কলম সংবাদ
প্রকাশিত: ২৭ মে, ২০২৪ ১২:৫৬ অপরাহ্ণ
আব্দুল্লাহ্ আল মামুন,পঞ্চগড় প্রতিনিধি: ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ২য় ধাপের পঞ্চগড়ের বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলায় বর্তমান উপজেলা পরিষদের ৬ চেয়ারম্যান প্রার্থী সহ ১২ জন প্রার্থী নির্বাচনে তাদের জামানত হারিয়েছেন।
এর মধ্যে বোদা উপজেলায় ৪ জন চেয়ারম্যান ও ২ জন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং দেবীগঞ্জ উপজেলায় ২ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ও একজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী তাদের জামানত হারান। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনে প্রদত্ত মোট ভোটের ১৫ ভাগের একভাগ ভোট নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীকে পেতে হবে তা না হলে ওই প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত বলে গণ্য হবে।
জেলার বোদা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী তাদের জামানত হারিয়েছেন। তারা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক রেলপথমন্ত্রীর এপিএস রাশেদ প্রধান, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বোদা পাইলট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক রবিউল আলম সাবুল, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মহিউদ্দীন এবং রাজিব কুমার বকশী।
নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনের প্রদত্ত মোট ৯২ হাজার ৯৩০টি ভোটের মধ্যে ১৫ শতাংশ হারে এই ৪ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ১৩ হাজার ৯৩৯টি ভোট পেতে হতো। কিন্তু উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক রেলপথমন্ত্রীর এপিএস রাশেদ প্রধান হেলিকপ্টার প্রতীকে পেয়েছেন ১২ হাজার ২৩৪টি ভোট, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বোদা পাইলট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক রবিউল আলম সাবুল কাপ পিরিচ প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ৯৪৬টি ভোট, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মহিউদ্দীন দোয়াত কলম প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ৪০৪টি ভোট এবং রাজিব কুমার বকশী টেলিফোন প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ৯১৩টি ভোট। উপজেলাটি চেয়ারম্যান পদে ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এ পদে ৯২ হাজার ৯৩০ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এর মধ্যে বৈধ ভোটের সংখ্যা ৯০ হাজার ৩০৪টি এবং বাতিলকৃত ভোট ২ হাজার ৬২৬টি ভোট। প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার ৪৭ দশমিক ১৩।
এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রার্থী তাদের জামানত হারিয়েছেন। তারা হলেন হেমন্ত কুমার সেন ও জীতেন্দ্রনাথ বর্মন। নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনের প্রদত্ত মোট ৯২ হাজার ৯৩০টি ভোটের মধ্যে ১৫ শতাংশ হারে এই ২ জন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ১৩ হাজার ৯৩৯ টি ভোট পেতে হতো। কিন্তু হেমন্ত কুমার সেন তালা প্রতীকে পেয়েছেন ৮ হাজার ২৮৮ টি ভোট এবং জীতেন্দ্রনাথ বর্মন উড়োজাহাজ প্রতীকে পেয়েছেন ১০ হাজার ৪৫৮টি ভোট। উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এ পদে ৯২ হাজার ৯৩০ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এর মধ্যে বৈধ ভোটের সংখ্যা ৮৭ হাজার ৭১৪ টি এবং বাতিলকৃত ভোট ৫ হাজার ২১৬ টি ভোট। প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার ৪৭ দশমিক ১৩।তবে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা তিন প্রার্থীর মধ্যে কেউই জামানত হারান নি।
এছাড়া দেবীগঞ্জ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। তারা হলেন, উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক চিশতির ছেলে ইঞ্জিনিয়ার মখদুম মাসুম মাশরাফি যুক্তি ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজু আহম্মেদ মিঠু।
নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনের প্রদত্ত মোট ১ লাখ ১১ হাজার ৫৪৩টি ভোটের মধ্যে ১৫ শতাংশ হারে এই ২ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ১৬ হাজার ৭৩১ টি ভোট পেতে হতো। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ার মখদুম মাসুম মাশরাফি যুক্তি মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৪ হাজার ৫৩০ টি ভোট এবং রাজু আহম্মেদ মিঠু ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ১৫ হাজার ২৬ টি ভোট। উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এ পদে ১ লাখ ১১ হাজার ৫৪৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এর মধ্যে বৈধ ভোটের সংখ্যা ১ লাখ ৮ হাজার ৪৮৪ টি এবং বাতিলকৃত ভোট ৩ হাজার ৫৯ টি ভোট। প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার ৫৬ দশমিক ০৬।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী তাদের জামানত হারিয়েছেন। তারা হলেন, উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও পামূলী ইউনিয়ন বিএনপির সহ সভাপতি আব্দুর রহিম, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান পরিমল দে সরকার ও নজরুল ইসলাম। নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনের প্রদত্ত মোট ১ লাখ ১০ হাজার ৯৩৪টি ভোটের মধ্যে ১৫ শতাংশ হারে এই ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ১৬ হাজার ৬৪০ টি ভোট পেতে হতো। কিন্তু আব্দুর রহিম চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ১৩ হাজার ৪৮২ টি ভোট, পরিমল দে সরকার টিয়া পাখি প্রতীকে পেয়েছেন ৪ হাজার ৪৫৮ টি ভোট এবং নজরুল ইসলাম উড়োজাহাজ প্রতীকে পেয়েছেন ৬ হাজার ২৪৬ টি ভোট । উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এ পদে ১ লাখ ১০ হাজার ৯৩৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।এর মধ্যে বৈধ ভোটের সংখ্যা ১ লাখ ৬ হাজার ৭৭১ টি এবং বাতিলকৃত ভোট ৪ হাজার ১৬৩ টি ভোট। প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার ৫৫ দশমিক ৭৫।
এ ছাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লুৎফুন নাহার জামানত হারিয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনের প্রদত্ত মোট ১ লাখ ১০ হাজার ৯৪৫টি ভোটের মধ্যে ১৫ শতাংশ হারে এই মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ১৬ হাজার ৬৪১ টি ভোট পেতে হতো। কিন্তু লুৎফুন নাহার ফুটবল প্রতীকে পেয়েছেন ১০ হাজার ৫৪৩ টি ভোট। উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এ পদে ১ লাখ ১০ হাজার ৯৪৫ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এর মধ্যে বৈধ ভোটের সংখ্যা ১ লাখ ৬ হাজার ৮৫৫ টি এবং বাতিলকৃত ভোট ৪ হাজার ৯০ টি ভোট। প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার ৫৫ দশমিক ৭৫।
বোদা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রির্টানিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার নজির বলেন, নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনের প্রদত্ত ভোটের ১৫ শতাংশ বা তার বেশি ভোট পেতে হবে একজন প্রার্থীকে। কেউ যদি এর কম পায় তাহলে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। সে হিসেবে বোদা উপজেলায় ৪ জন চেয়ারম্যান ও দুইজন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।