জাহিদ হোসেন, দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ সাংবাদিক ইউনিয়ন দিনাজপুর (২৯৩৬) এর সভাপতি জি এম হিরু ও সাধারণ সম্পাদক মাহফিজুল ইসলাম রিপনের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা করা যেন নিত্যদিনের কাজে পরিণত হয়েছে। তাদের নানা অনিয়মের কারণে সর্বদাই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে এই ইউনিয়ন।
এবারও তার ব্যতিক্রম কিছু ঘটেনি, অভিযোগ উঠেছে, সম্প্রতি গত ২৮ এপ্রিল ২০২৫ গঠনতন্ত্র ভঙ্গ করে ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান কার্যনির্বাহী সদস্যকে বহিষ্কার করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন ইউনিয়ন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। যা নিয়ে দিনাজপুর সাংবাদিক মহলে চলছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা।
ইউনিয়ন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নানা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়ে পত্রিকায় সত্য সংবাদ প্রকাশ করায় ২৮ মার্চ এম এ সালাম নামের একজন ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান কার্যনির্বাহী সদস্যকে কৈফিয়ত তলব নোটিশ প্রদান করেন ইউনিয়ন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
নোটিশে উল্লেখ, ইউনিয়নের ১৮তম কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। তবে, অভিযোগ রয়েছে এই সভা ও কৈফিয়ত তলব নোটিশ সম্পর্কে কোন কিছুই জানেন না নির্বাহী কমিটির অন্যান্য সদস্যরা। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কার্যনির্বাহী কমিটির অনুমোদন ছাড়া গ্রহণ করা যায় না।
এর আগে গত ১৯ এপ্রিল ২০২৫ বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) গঠিত তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে দিনাজপুরে সরেজমিন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনিয়মের বিরুদ্ধে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ বিষয় তদন্ত সম্পন্ন করেছেন, কিন্তু এখনো চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়নি। তার আগেই কৈফিয়ত তলব নোটিশ ও সদস্যপদ বাতিলের হুমকি প্রদান গঠনতন্ত্রের ২৪ নম্বর ধারা লঙ্ঘন করে। সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রেরিত কৈফিয়ত তলব নোটিশে নির্দিষ্ট তারিখ, ঘটনার বিবরণ বা লিখিত অভিযোগপত্রের কপি সংযুক্ত করা হয়নি। তাহলে কীভাবে তারা এমন ভুতুড়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন? বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সচেতন সাংবাদিকরা।
এদিকে, নোটিশের নিচে প্রেরকের দ্বৈত পরিচয় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সাংবাদিকরা। ২৮ এপ্রিলের কৈফিয়ত তলব নোটিশে মাহফিজুল ইসলাম রিপনকে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে স্বাক্ষর করতে দেখা যায়, অথচ নিচে তার পদবি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তাহলে একই ব্যক্তি কি দ্বৈত দায়িত্ব পালন করছেন? সাংবাদিকরা অভিযোগ করেছেন, নেতৃত্বের এমন স্বেচ্ছাচারিতায় সংগঠনটি গঠনতান্ত্রিক শৃঙ্খলা হারাচ্ছে।
এ ব্যাপারে এম এ সালামের সাথে কথা হলে তিনি জানান, গত ২৬ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে কার্যনির্বাহী কমিটির ১৮তম সভা অনুষ্ঠিত হয়নি, আমাকেসহ নির্বাহী সদস্যদের ডাকা হয়নি এবং জানানো হয়নি। নির্বাহী কমিটির সদস্যদের পর্যায়ক্রমে একের পর এক ইউনিয়ন অফিসসহ যত্রতত্র ডেকে নিয়ে আমার বিরুদ্ধে স্বাক্ষর গ্রহণ করা হয়েছে, যা গঠনতন্ত্রবিরোধী। তিনি অভিযোগ করেন এই নোটিশটি একতরফাভাবে এবং নিরপেক্ষ তদন্ত ছাড়াই ব্যক্তিগত বিদ্বেষমূলক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে প্রদান করা হয়েছে।
এই বিষয়ে সাংবাদিক ইউনিয়ন দিনাজপুরের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদকের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় সাংবাদিক মহলে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং সাংবাদিকরা বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)’র হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।