ডাঃ নুরল হক,বিরামপুর প্রতিনিধি: দিনাজপুরের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলীয় উপজেলাগুলোতে সবজি চাষে বিপ্লব ঘটেছে। জেলার প্রধান চাষাবাদ ধান কিন্তু পূর্বাঞ্চলীয় উপজেলা বিরামপুর, ফুলবাড়ির, নবাবগঞ্জ, হাকিমপুর, ঘোড়াঘাট উপজেলার প্রধান চাষাবাদ আমন ধান। দ্বিতীয় ইরি- বোরো, তৃতীয় স্থানে রয়েছে শাক- সবজির চাষ।
আলু, পিঁয়াজ, রসুন, মরিচ, পটল, বেগুন , ঝিঙ্গা, টমেটো, সিম,ঢ়েড়স কপি সহ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি চাষে লাভজনক হওয়ায় চাষীরা ঝুঁকে পড়েছে শাক সবজির চাষে। এ অঞ্চলে সারা বছর শাক সবজি চাষ হলেও শীতকালে শাকসবজি চাষ হয় বেশি। বাজারে পাওয়া যায় আলু সহ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি। উৎপাদিত টাটকা শাকসবজি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে পাইকাড়েরা কিনে নিয়ে যায় জেলা শহরে। এ বছর আলু, বেগুন, পটল, বাঁধাকপি ,ফুলকপি, মরিচ, পিঁয়াজ, ঢ়েড়স লতি কচু চাষীদের অধিক লাভ দেখিয়েছে। ফলে দিন দিন চাষীদের শাক সবজি চাষে আগ্রহী করে তুলেছে।
পলি জমিতে শাকসবজির চাষ বেশি হলেও বিভিন্ন প্রকারের জমিতে ব্যাপক পরিচর্যার মাধ্যমে শাকসবজি চাষ করেছেন চাষিরা। উপজেলার বহু কৃষক সবজি চাষ করে এখন স্বাবলম্বী হয়েছেন। শাক সবজি চাষে বিরামপুর উপজেলায় অনেক চাষী সফলতা সাক্ষ্য রেখেছেন।
চলতি মৌসুমে চন্ডিপুর গ্রামের আব্দুল মজিদ বারি- ১ জাতের লতি কচু চাষ করেছেন । তিনি ২০ শতক জমিতে দেড় লাখ টাকার কচুর লতি বিক্রি করেছেন । চক বসন্তপুর গ্রামের কৃষক মুস্তাক আহমেদ ৮ শতক জমিতে মোট ১০ হাজার টাকা খরচ করে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার ঢেঁড়স বিক্রি করে ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন। পস্তমপুর গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম ১৬ শতক জমিতে ৩ হাজার টাকা খরচ করে ৪০ হাজার টাকা ঢেঁড়স বিক্রি করেছেন। তারা জানান ঢেঁড়স চাষে খরচ, কম লাভ বেশি। ঝিঙ্গা ১০ শতক জমিতে ৪০ হাজার টাকা খরচ করে প্রায় ১ লাখ টাকা বিক্রি করেন চক বসন্ত গ্রামের মোস্তাক। ১২ শতক জমিতে বেগুন চাষে ২০ হাজার টাকা খরচ করে ৬০ হাজার টাকা বিক্রি করেন হাবিবপুর গ্রামের মনির হোসেন। কৃষকেরা জানান অন্যান্য ফসলের চেয়ে সবজি চাষে অনেক লাভ। উপজেলার মাহমুদপুর ,ভেড়ার পাড়, পলি প্রয়াগপুর, হরে কৃষ্ঠপুর, জোতজয়রামপুর, চখ বসন্তপুর, হাবিবপুর এলাকায় প্রচুর শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন শাকসবজির চাষ করে অনেক চাষী তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছে। চক বসন্তপুর গ্রামের মোস্তাক জানান তিনি বিভিন্ন মৌসুমে বিভিন্ন শাকসবজি চাষ করে সংসারের সাফল্য অর্জন করেছেন তার সংসারে স্ত্রী এবং দুই সন্তান রয়েছে তারা ইস্কুলে এবং কলেজে লেখাপড়া করছে। কৃষকেরা
এ অঞ্চলের উৎপাদিত শাকসবজি স্থানিয় চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি পাইকাড়েরা খরিদ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যায় । চাষীদের উৎপাদিত পণ্য একই বাজারে হাত বদল হয়ে পাইকারদের হাতে পড়ে। উৎপাদনের ভরা মৌসুমে শাকসবজি সংরক্ষণ করতে না পারায় একই হাতে বাজারে আমদানি বেড়ে যায়। ফলে এসব পণ্যের মূল্যও পড়ে যায় । এ অঞ্চলের কাঁচা শাকসবজি সংরক্ষণের হিমাগার স্থাপন করা হলে পণ্যের ন্যায্য মূল্য চাষীরা পাবেন। এতে আর্থিকভাবে লাভ হবে বেশি। এ অঞ্চলে হিমাগার স্থাপন সহ কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং কৃষি পন্যের নির্ভর কল কারখানা স্থাপন করা হলে উৎপাদিত শাকসবজির দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অবদান রাখবে।