admin || মুক্ত কলম সংবাদ
প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর, ২০১৯ ৮:১৭ পূর্বাহ্ণ
ঢাকায় পেঁয়াজের দাম আড়াইশ’ টাকায় উঠেছে,ঢাকার বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রায় ২৫০ টাকা কেজি দরে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কেজিপ্রতি ২২০ টাকায় বিক্রি হলেও গত কয়েক দিনের মধ্যে শুক্রবার পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ দামে। ক্রেতারা ক্ষোভের সঙ্গে জানাচ্ছেন,তারা এখন আগের চেয়ে কম পরিমাণে পেঁয়াজ কিনছেন। রান্নার সময় ব্যবহার করছেন হিসেব করে। খুচরা দোকানদাররা বলছেন,তারাও পড়েছেন বড় লোকসানের মুখে। ঢাকার রামপুরা বাজারে গিযে দেখা গেল,এক ব্যবসায়ী পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ২৪০ টাকা প্রতি কেজি। অন্য কিছু দোকানে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকায়। গত কয়েক দিন ধরে পেঁয়াজের দামের যে ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে আজ সেটা শুক্রবার পৌঁছে গেছে রেকর্ড দামে।
কীভাবে পরিস্থিতি সামলাচ্ছেন মানুষ?
বাঙালির রান্নার একটি অন্যতম প্রধান উপকরণ এই পেঁয়াজের দাম যে নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে – সেটা কীভাবে সামলাচ্ছেন মানুষ? গৃহিণী সেলিনা আক্তার বলছেন, প্রতিদিনের রান্নায় এখন তিনি পেঁয়াজ ব্যবহার করছেন হিসেব করে।

ক্রেতারা বলছেন তারা পেঁয়াজ কিনছেন কম করে
ক্রেতারা বলছেন তারা পেঁয়াজ কিনছেন কম করে আগে একটা তরকারিতে পেঁয়াজ দিতাম ৫/৬টা। কোন হিসেব ছিল না দিনে কতটা পেঁয়াজ ব্যবহার করছি। কিন্তু এখন প্রতি তরকারিতে ২/৩টার বেশি পেঁয়াজ দিচ্ছি না। আরেকজন গৃহিণী মারিয়া কিছুটা ক্ষোভের সঙ্গে বলছিলেন, তার বাসায় এখন পেঁয়াজের ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন রেখেছেন এটার সমাধান কী?
বাজারে বেচাকেনাও কমে গেছে সতর্ক হয়েছেন ক্রেতারাও। আগে এক কেজি পেঁয়াজ কিনলে এখন কিনছেন ২৫০ গ্রাম। মিরপুর বাজারে সকালে বাজার করতে আসা একজন মুন্সি মিয়া বলছিলেন এক কেজির জায়গায় এক পোয়া কিনছি। বাসায় বলে দিয়েছি পেঁয়াজ কম দিয়ে রান্না করতে। আরেকজন বলছিলেন আমরা সাধারণ মানুষ, একটা জিনিসের দাম বাড়লে তো কিছু করার থাকে না আমাদের।পেঁয়াজ খাওয়া তো বাদ দিতে পারি না। তাই কম কিনছি।

গৃহিণীরা বলছেন তারা রান্নাতেও কম পেঁয়াজ দিচ্ছেন
গৃহিণীরা বলছেন তারা রান্নাতেও কম পেঁয়াজ দিচ্ছেন ঢাকার মিরপুর,গুলশান,বাড্ডা,রামপুরার কাঁচাবাজারগুলোতে গতকাল পেঁয়াজের দাম দুশ থেকে ২২০-এর মধ্যে থাকলেও খুশি নন খোদ খুচরা বিক্রেতারাও। তারা বলছেন, ২২০ টাকা দিয়ে শুক্রবার পেঁয়াজ কিনে তাদেরকে কিছুটা লাভ রেখে বেচতে হচ্ছে আড়াইশ টাকায়। প্রতিনিয়ত বাকবিতণ্ডায় জড়াতে হচ্ছে ক্রেতাদের সাথে। আর পেঁয়াজ কিনবো না একজন বিক্রেতা আনিসুজ্জামান বলছিলেন ২৫ কেজি পেঁয়াজ কিনেছি প্রতি কেজি ২২০ টাকায়। এরপর আমার যাতায়াত খরচ আছে। এখন আমি যদি ২৪০/২৫০ টাকায় না বিক্রি করি তাহলে তো আমার হবে না। তার পরেও লসের মধ্যে আছি। এই ২৫ কেজি বিক্রি করতে পারলে আর পেঁয়াজ কিনবো না। আরেকজন খুচরা বিক্রেতা প্রচণ্ড ক্ষোভ নিয়ে বলছিলেন,কাস্টমাররা এসে ঝগড়া করে। আমি কয়জনের সাথে ঝগড়া করবো? কাদের বোঝাবো? আমার তো লস হচ্ছে। আমি কী এক পেয়াজ নিয়ে বসে থাকবো নাকি অন্য জিনিস বিক্রি করবো?

ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ রাখার পর থেকেই বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে
ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ রাখার পর থেকেই বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে সেপ্টেম্বর মাসে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেবার পর থেকেই বাংলাদেশে এর দাম বাড়তে থাকে।যদিও বাংলাদেশে যে পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয় সেটা দিয়ে চাহিদার ৬০% পূরণ হয়। বাকি প্রায় ৪০% আমদানি করা হয়, এবং তার বেশিরভাগই আসে ভারত থেকে। এদিকে কারওয়ান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা মূলত ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে থাকেন খরচ বাঁচাতে। এখন ভারত রপ্তানির উপর যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তাতে করে পেঁয়াজ কেনাবেচায় তারাও বিপত্তির মধ্যে রয়েছেন।