admin || মুক্ত কলম সংবাদ
প্রকাশিত: ১৩ মার্চ, ২০২০ ৬:১২ পূর্বাহ্ণ
ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি এক্সপ্রেসওয়ে বৃহস্পতিবার যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, এটিই বাংলাদেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে যেখানে কোন রকম প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই দ্রুত গতিতে গাড়ি চলতে পারবে। তবে পুরো ৫৫ কিলোমিটার রাস্তা এখনই একটানা ব্যবহার করা যাবেনা, কারণ মাঝখানে রয়েছে পদ্মা নদী। পদ্মা নদীর উপর প্রায় ৬.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হলে এই এক্সপ্রেসওয়ের পুরো সুবিধা পাওয়া যাবে বলে কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন। তখন ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত যেতে সময় লাগবে ৪২ মিনিট – এমনটাই বলছে সরকারের সড়ক ও জনপদ বিভাগ। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হলে রাজধানী ঢাকার সাথে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর সরাসরি সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে।

মুন্সীগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা জানান, পদ্মা নদীর দুই পাশে এই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালের মে মাসে।শুরুতে প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল ৬,০০০ কোটি টাকা। তবে শেষ পর্যন্ত এই সড়ক নির্মাণ করতে খরচ হয়েছে ১১,০০০ কোটি টাকা। ধীরগতির যানবাহন যাতে এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার না করে সেজন্য চার লেনের এই সড়কের দুই পাশে দুটো সার্ভিস লেন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মি. মোস্তফা। এই সার্ভিস লেন দিয়ে ধীরগতির যানবাহন চলাচল করবে।
কর্মকর্তারা বলছেন, যানবাহন ইচ্ছে মতো যে কোন জায়গা দিয়ে এই এক্সপ্রেসেওয়েতে উঠা-নামা করতে পারবে না। এখানে উঠা-নামার জন্য কিছু নির্দিষ্ট পয়েন্ট রাখা হয়েছে। এছাড়া এই সড়ক ব্যবহার করতে হলে টোল দিতে হবে। তিন চাকার যানবাহন এই এক্সেপ্রেসওয়ে ব্যবহার করতে পারবে না। মি. মোস্তফা জানান, এই এক্সপ্রেসওয়েতে পাঁচটি ফ্লাইওভার, চারটি রেলওয়ে ওভারব্রিজ এবং চারটি বড় সেতু রয়েছে।

এক্সপ্রেসওয়ে নিরাপদ কতোটা?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কম সময়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পৌঁছানো সম্ভব হলে গাড়ির জ্বালানী খরচ কমবে। ফলে একদিকে যেমন সময় সাশ্রয় হবে, অন্যদিকে জ্বালানী সাশ্রয়ের ফলে তা দেশের অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউট-এর সহকারী অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ সাইফুন নেওয়াজ বলেন, এক্সপ্রেসওয়ে নিরাপদে ব্যবহার করার জন্য চালকদের দক্ষতা এবং গাড়ির মান গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চললে এবং টায়ারের মান ভালো না হলে, সেটা গরম হয়ে বার্স্ট করতে পারে। এতে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বেড়ে যায়, বলছিলেন মি. নেওয়াজ। তিনি বলেন, যে রাস্তায় দ্রুত গতিতে গাড়ি চলতে পারে, সেসব রাস্তায় চলাচল করা গাড়ির ফিটনেস ভালো থাকা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশে কয়েকটি চারলেনের মহাসড়ক থাকলেও সেগুলোতে নানা রকম সমস্যা বিশেষজ্ঞরা চিহ্নিত করেন, যার একটি হলো উল্টো পথে গাড়ি চলা, যা দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। মুন্সীগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা বলেন, ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে উল্টোপথে গাড়ি চলাচলের কোন সুযোগ রাখা হয়নি।
তিনি বলেন, এই এক্সপ্রেসওয়ের আশেপাশে কোন স্থাপনা কিংবা হাটবাজার নেই, ফলে দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও কম।