admin || মুক্ত কলম সংবাদ
প্রকাশিত: ৩ জুন, ২০২৩ ৫:২৫ অপরাহ্ণ
মোসাদ্দেকুর রহমান সাজু, ডোমার নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ৯নং সোনারায় ইউনিয়নের ৩শত ৬৮ জন ভিজিডি কার্ডধারী দুঃস্থ অসহায় নারীদের ভিজিডি কার্ডের সঞ্চয়ের জমানো প্রায় নয় লক্ষ টাকা উপকার ভোগীদের ফেরত না দিয়ে আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে সচিব তারেক রহমানের বিরুদ্ধে।
সঞ্চয়ের টাকা ফেরত না দেওয়ায় গত ৪ মাস থেকে ২০২৩/২৪ অর্থ বছরের নতুন ভিজিডি কার্ডধারী উপকারভোগীরা চাল না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বলে জানিয়েছেন ইউপি সদস্যরা। তারা আরও জানায় পুরাতন উপকারভোগীদের সঞ্চয়ের জমানো টাকা সচিব তারেক সাহেব ফেরত দেওয়ার পরেই নতুন কার্ডধারীদের চাল দেওয়া হবে।
ভুক্তভোগীরা বলেন ইউপি সচিব তারেক রহমান মাসের বেশিরভাগ সময় অফিসে অনুপস্থিত থাকেন। তারা আরও বলেন, গত ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ইং পুরাতন ভিজিডি কার্ডধারীদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৫ মাস অতিবাহিত হলেও তাদের সঞ্চয়ের ২ হাজার ৪ শত করে মোট ৩শত ৬৮ জনের টাকা ফেরত না দিয়ে টালবাহানা করছেন সচিব তারেক।নিজের সঞ্চয়ের টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও সচিবের পিছনে ধর্ণা দিয়েও টাকা ফেরত পাচ্ছে না ওইসব দুঃস্থ উপকারভোগী নারীরা।
ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি ভিজিডি কার্ডধারী দুঃস্থ নারী দুই বছরে ২৪ বার ৩০ কেজি করে চাল উত্তোলন করবে। চাল উত্তোলনের আগে দুইশত টাকা করে ২৪ বার ব্যাংককে নিজস্ব সঞ্চয়ী হিসাবে টাকা জমা রাখবে। সেই টাকা দুই বছর পর তারা উত্তোলন করতে পারবে।
ভিজিডি কার্ডধারী দুঃস্থ নারী মজিদা বেগম (৩৮), মেরিনা খাতুন (৩৯), আয়শা খাতুন (৩৪) অভিযোগ করে জানান, আমাদের কাছে দুইশত করে টাকা জমা নিয়ে তারপর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ভিজিডি’র চাল দেয়। চেয়ারম্যান ও সচিব বলেছে, তারা ব্যাংকে আমাদের টাকা জমা রাখে। এক বছর পর নতুন চেয়ারম্যান আসায় আমাদের আর টাকা জমা নেয় না। এখন দুই বছর পার হয়েছে, আমাদের ভিজিডি’র মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু আমাদের জমানো সঞ্চয়ের টাকা ফেরত পাচ্ছি না। পুরাতন চেয়ারম্যান বলছে, টাকা ইউনিয়ন পরিষদে আছে। নতুন চেয়ারম্যান বলছে, তিনি কিছু জানেন না। আর সচিব দীর্ঘদিন হতে ইউনিয়ন পরিষদে আসে না। আমাদের টাকার কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।
এবিষয়ে তৎকালীন চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমি সব হিসাব-নিকাশ সচিবের কাছে জমা দিয়েছি। এখন পরিষদের কোন বিষয়ে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।
বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম ফিরোজ চেীধুরী জানান, সচিবকে বলা হয়েছে দুঃস্থ নারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার। তিনি টাকা ফেরতের ব্যবস্থা না করলে উদ্ধর্তন কতৃপক্ষের নিকট তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করা হবে।
০৯ নং সোনারায় ইউনিয়ন পরিষদ সচিব তারেক রহমান দুস্থ নারীদের সঞ্চয়ের টাকা তার কাছে রয়েছে নিস্চিত করে বলেন তাদের সমুদয় টাকা পরিশোধ করা হবে। অফিস না করলে হাজিরা খাতায় সই দেন কিভাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেদিন অফিসে আসি ০১ মাসের সব সই দিয়ে দেই।
এদিকে ঊপকারভোগীরা বলেন, বর্তমান মেম্বারদের মাধ্যমে ইউপি সচিব অর্ধেক টাকা নেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে। নাম না জানার শর্তে এক ইউপি মেম্বার বলেন, সচিব তাকে ৩৫ হাজার টাকা দিয়েছে তার ওয়ার্ডে যেসব উপকার ভোগী ছিল তাদের অর্ধেক করে টাকা দেওয়ার জন্য। তবে উপকার ভোগীরা ২ হাজার ৪ শত টাকার কম কোন টাকা নিবেনা বলে জানিয়েছে।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জান্নাতুল ফেরদৌস হ্যাপি বিষয়টি শুনেছেন বলে নিস্চিত করে জানান, বিষয়টির সতত্য পেলে সচিবের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।