admin || মুক্ত কলম সংবাদ
প্রকাশিত: ১৮ মে, ২০২০ ১০:৪৭ পূর্বাহ্ণ
নাগরিক ভাবনা, মোঃ আল-মামুন আবদুল্লাহঃ করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার জন্য মানুষ সারারাত রাস্তায় শুয়ে থাকবে; এমন দৃশ্য কী কল্পনা করা যায়? এই দৃশ্য কাল্পনিক বা বানানো কোনো গল্প নয়। এই দৃশ্য খোদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতার ভবনের সামনের ফুটপাতের। গতকাল শনিবার ভোর সোয়া ৫টায় ছবিটি তোলা। ছবিটি আজ প্রকাশ করেছে দৈনিক দেশ রূপান্তর।
দেশ রূপান্তরের সংবাদচিত্রী রুবেল রশীদ মধ্য রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত বিএসএমএমইউ ও মুগদা জেনারেল হাসপাতাল সরেজমিনে ঘুরে দেখেন, ছবি তোলেন। তার বর্ননা শিউরে উঠার মতো। আসলে করোনাভাইরাস নমুনা পরীক্ষার সিরিয়ালের জন্য প্রতিদিন সকালে টিকেট দেওয়ার কথা। কিন্তু লোকজন হাসপাতালে গিয়ে দেখেন সকাল হওয়ার আগেই টিকেট শেষ! লোকজনেরও তাই দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। অসুস্থ্য মানুষজন সিরিয়াল পেতে মাঝরাতেই হাসপাতালে চলে যাচ্ছেন। সাদা কাগজে নাম ও ফোন নম্বর লিখে ইটের টুকরা কিংবা ছোট পাথর দিয়ে চাপা দিয়ে রাস্তায়, ফুটপাতে; যে যেখানে পারছেন ঘুমাচ্ছন। কেউ সিরিয়াল ভাঙছেন কিনা সেটা দেখার জন্য রাত জেগে পাহারা দেন কউ কেউ। অনেকে সারা রাত জেগে থেকে সকালে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার শক্তিও হারিয়ে ফেলেন। বিষয়টা কত অমানবিক, ভাবুন। একদিকে অসুস্থ তার উপর রাস্তায় গাদাগাদি করে থাকা আসলে কতটা স্বাস্থ্যসম্মত? কে পজেটিভ কে নেগেটিভ তা তো পরীক্ষার আগে জানারও কথা নয়। তাহলে
বিষয়টা কোথায় গিয়ে দাঁড়াচ্ছে?
এই যে এই দুই হাসপাতালকে ঘিরে এত মানুষের ভীড়, কেন? অন্য হাসপাতালগুলো তাহলে কী করে! কেন সেখানে মানুষ যায় না? যতদূর জানতে পেরেছি, ঢাকা মেডিক্যালে করোনা টেস্ট হয় শুধুমাত্র অ্যাডমিটেড প্যাসেন্টদের। বাইরে থেকে এসে এখানে টেস্ট করানোর সুযোগ নেই। শেখ রাসেল জাতীয় গেস্ট্রোলিভার ইনস্টিঢিউট হাসপাতাল খুবই আধুনিক মানের। কিন্তু সেটি এখনো করোনা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত না।আনোয়ার খান মর্ডান মেডিক্যালে কোভিড ১৯ উদ্বোধনের ছবি দেখলাম। আজ এখানে গিয়ে কোনো করোনা রোগীর দেখা মিলল ন। প্রাভা হেলথ কেয়ার নাকি ৪,৫০০ টাকার বিনিময়ে বাসায় এসে নমুনা নিয়ে যাচ্ছে। স্কয়ার, অ্যাপোলো, ইউনির্ভাসেল, ইউনাইটেড কিংবা শাহাবুদ্দীন মেডিক্যালে নমুনা পরীক্ষা করতে গেলে নিশ্চয়ই অনেক টাকা গুনতে হয়। তাই হয়তো সেখানে রোগির চাপও নেই।এই সময় যেখানে লোকজনের থাকা খাওয়াই কঠিন হয়ে গেছে সেখানে মানুষ বাড়তি টাকা গোনার ঝুঁকি নেবে কেমন করে?
সরকারি হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা করতে টাকা লাগে না। সে কারণেই হয়তো ভুক্তভোগী লোকজন দুর্ভোগকে মেনে নিচ্ছেন। অপর দিকে বেসরকারি হাসপাতালগুলো এখন প্রায় ফাঁকা, তবু লোকজন সেখানে যেতে চায়না কারণ ওখানে গেলে টাকার চিন্তায় সুস্থ মানুষেরও অসুস্থ হয়ে যাওয়া লাগে।
সাহাদাত পারভেজ