admin || মুক্ত কলম সংবাদ
প্রকাশিত: ৩১ মে, ২০২২ ১০:৩৯ অপরাহ্ণ
রফিকুল ইসলাম জিলু, ব্যুরো প্রধানঃ ঢাকার আশুলিয়ায় আঁখি নামে দেড় বছরের শিশুকে অপহরণের তিন মাস পর গাজীপুর থেকে উদ্ধার করেছে র্যাব-৪। এ সময় অপহরণকারী রাশেদুল ইসলাম ও রোকসানা নামে দুইজনকে আটক করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৪ এর অধিনায়ক ডিআইজি মোজাম্মেল হক জানান,৩০মে সোমবার প্রথমে রংপুর থেকে রাশেদুল ইসলামকে আটক করা হয়। স্বীকারোক্তিতে রাশেদ বলেন আমার পালিয়ে যাওয়া স্ত্রীর সন্ধান পেতে স্ত্রীর সহকর্মীর শিশু সন্তান আঁখিকে অপহরণ করেছি। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে, গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানার রতনপুর এলাকার তার ফুপু রোকসানা কে আটক করা হয়। তার কাছ থেকে শিশু আঁখিকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, গত ৩১ মার্চ সকালে আশুলিয়ার শিমুলিয়ার টেঙ্গুরী এলাকা থেকে দেড় বছরের শিশু আঁখি অপহৃত হয়। শিশুটির বাবা সাদ্দাম হোসেন পেশায় রাজমিস্ত্রি ও মা মিরা আক্তার পোশাক শ্রমিক। ঘটনার পরদিন ১ এপ্রিল এ বিষয়ে আশুলিয়া থানায় একটি শিশু অপহরণ মামলা করা হয়। এ বিষয়ে ছায়া তদন্তের ধারাবাহিকতায় সোমবার রংপুর থেকে অপহরণকারী রাশেদুলকে আটক করা হয়। পরে গাজীপুর থেকে অপহৃত শিশু আঁখিকে উদ্ধারসহ রোকসানা নামে আরেক নারীকে আটক করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাশেদুল জানান, তার স্ত্রী নুরজাহান ও অপহৃত শিশুটির মা মিরা আশুলিয়ায় একই গামেন্টসে চাকরি করতেন। যার সুবাদে দুজনের মধ্যে সু-সম্পর্ক ছিল। এক পর্যায়ে রাশেদুলের স্ত্রী ৭ বছরের শিশু সন্তানকে রেখে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যান। স্ত্রী কার সঙ্গে পালিয়ে কোথায় আছেন এ বিষয়ে মিরা জানেন বলে সন্দেহ করেন রাশেদ। বেশ কয়েকদিন মিরাকে জিজ্ঞাসাও করেন রাশেদ। কিন্তু নিজের স্ত্রীর কোনো তথ্য না পেয়ে মিরার শিশু সন্তান আঁখিকে অপহরণের পরিকল্পনা করেন রাশেদ। সে অনুযায়ী গত ৩১ মার্চ সাদ্দাম ও মিরা দম্পতি কাজে চলে যাওয়ার পরে বাসা ভাড়া নেয়ার কথা বলে তাদের বাড়ি যান রাশেদ। কৌশলে আঁখি ও তার বড় ভাই মিরাজকে ১০ টাকা দিয়ে চকলেট খাওয়ার জন্য পাশের মুদি দোকানে পাঠায় রাশেদ। সেখান থেকে শিশু আঁখিকে কোলে নিয়ে পালিয়ে যান তিনি।
ঘটনার এক সপ্তাহ পরে রাশেদ শিশুটির মা-বাবাকে ফোন করে জানায়, শিশুটি তার হেফাজতে আছে। তার স্ত্রীর সঠিক ঠিকানা জানালে শিশুটিকে ফেরত দেওয়া হবে।
এক পর্যায়ে আঁখির বাবা-মার কাছে ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন এবং বিকাশে ২০ হাজার টাকা নেন রাশেদ। কিন্তু গ্রেফতারের ভয়ে রাশেদ মুক্তিপণের টাকা না তুলেই মোবাইল বন্ধ করে দেন। এরপর থেকে গ্রেফতারের আগ পর্যন্ত তিনি কোনো মোবাইল ব্যবহার করেননি। ঘটনার দিনই শিশু আঁখিকে গাজীপুরে রোকসানার কাছে নিয়ে যান এবং নিজের মেয়ে পরিচয় দিয়ে ফুপুর কাছে কিছুদিন রাখতে অনুরোধ করেন। এরপর নিজের গ্রামের বাড়ি রংপুরে গিয়ে আত্মগোপন করেন রাশেদ। পরেবিকালে গ্রেফতারকৃত আসামিদের আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়।