মিরু হাসান, স্টাফ রিপোর্টার || মুক্ত কলম সংবাদ
প্রকাশিত: ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৮:৫৪ অপরাহ্ণ
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের কাশিরা বাজারসংলগ্ন কুমিরপুকুর গ্রামে চোর সন্দেহে সুজন মিয়া (২৭) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য সেলিম রেজা ও সানিসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে নিহতের পরিবার। নিহত সুজন মিয়া ওই গ্রামের ওসমান আলীর ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাশিরা বাজার হাট অফিসের একটি কক্ষে সুজন মিয়াকে আটক করে ইউপি সদস্য সেলিম মেম্বারের নেতৃত্বে কয়েকজন ব্যক্তি চোর সন্দেহে মারধর করেন। একপর্যায়ে তার গলায় রশি বাঁধা অবস্থায় ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায় বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে খবর পেয়ে আক্কেলপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে পাঠায়।
ময়নাতদন্তের আগে নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। পরিবারের দাবি, এটি আত্মহত্যা নয়; বরং পরিকল্পিতভাবে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের স্ত্রী মারুফা আক্তার বলেন, “গতকাল সন্ধ্যায় সেলিম মেম্বার ফোন করে আমার স্বামীকে ডেকে নেয়। সেখানে তাকে মারধর করা হয় এবং সারারাত হাত-পা বাঁধা অবস্থায় একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। আমি সন্তানদের নিয়ে রাত ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সেখানে অপেক্ষা করেও স্বামীকে ফেরত পাইনি।
সকালে আমার স্বামী ফোন করে জানায়, তাকে থানায় দেওয়া হবে নাকি ছেড়ে দেওয়া হবে—তা নিয়ে আলোচনা চলছে। এর কিছুক্ষণ পরই শুনি, সে মারা গেছে। সেলিম মেম্বারসহ ১০–১২ জন মিলে আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সুজন মিয়াকে সারারাত আটকে রেখে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, চুরির কোনো প্রমাণ ছাড়াই তাকে হত্যা করা হয়েছে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য সেলিম হোসেন বলেন, “গ্রামবাসী চুরির সন্দেহে তাকে আটক করলে আমি উদ্ধার করে কাশিরা বাজার হাটখোলা কক্ষে রাখি। পুলিশকে খবর দেওয়া হলেও তারা আসেনি। সকালে শুনি, সে আত্মহত্যা করেছে।
এ বিষয়ে গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হবিবর রহমান বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত নিন্দনীয়। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত, তারা ঘৃণিত কাজ করেছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবার মামলা করলে দোষীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।