মিঠু মিয়া,গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি || মুক্ত কলম সংবাদ
প্রকাশিত: ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১১:৩২ অপরাহ্ণ
জমি দখলকে কেন্দ্র করে গাইবান্ধায় দিনে দুপুরে প্রকাশ্যে উভয় পক্ষের সংঘর্ষে দুইজন যুবক গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গাইবান্ধা সদর থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় নামীয় ও অজ্ঞাত মিলিয়ে মোট ৩৭ জনকে আসামি করা হলেও প্রতিবন্ধী যুবক ও ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে না থাকা এক বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেধাবী ছাত্রকে আসামি করায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে গাইবান্ধা সদর উপজেলার শাপলা মেইল এলাকায় দীর্ঘদিনের পারিবারিক জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
গুরুতর আহতদের মধ্যে রুবেল মিয়া (৩০) গাইবান্ধা পৌরসভার মহুরি পাড়া এলাকার ব্যবসায়ী মোকাব্বর মিয়ার ছেলে। সংঘর্ষ চলাকালে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার ডান হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অপর আহত গোলাম হাফিজ (২৫) সদর উপজেলার সুখনগর নারায়ণপুট (বটতলা) এলাকার মৃত আব্বাস আলীর ছেলে। তিনি মাথা ও হাতে গুরুতর জখম হন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে মোশাররফ গং ও একই এলাকার বাবু গংদের মধ্যে জমির মালিকানা ও দখল নিয়ে বিরোধ চলছিল। ঘটনার দিন জমিতে ঘর নির্মাণ ও ভাঙচুরকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষ দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে বাবু গংদের হামলায় রুবেল মিয়ার কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়। পাল্টা হামলায় মোশাররফ গংদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গোলাম হাফিজ গুরুতর আহত হন।
আহত রুবেল মিয়াকে প্রথমে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল (পঙ্গু হাসপাতাল) এ স্থানান্তর করা হয়।
অপর আহত গোলাম হাফিজকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানে আবারও হামলার শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। এতে তিনি পুনরায় গুরুতর আহত হন। পরে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলেও বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনার পর মতিউর রহমান ও আছমা বেগম বাদী হয়ে গাইবান্ধা সদর থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। দুই মামলায় উভয় পক্ষের ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২০ জনকে আসামি করা হয়।
এদিকে মামলার আসামি তালিকায় একজন প্রতিবন্ধী যুবক মাহাবুব ও ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকা এক বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেধাবী ছাত্রের নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে নানা প্রশ্ন ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
মতিউর রহমানের দায়ের করা মামলায় ইতোমধ্যে সদর থানা পুলিশ তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে। তবে আছমা বেগমের দায়ের করা মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন,জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে উভয় পক্ষের সংঘর্ষে দুইজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। ঘটনার দিন তিনজনকে আটক করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তদন্তে যদি কোনো নির্দোষ ব্যক্তির নাম উঠে আসে, তাহলে তদন্ত প্রতিবেদনে তা বাদ দেওয়া হবে।