admin || মুক্ত কলম সংবাদ
প্রকাশিত: ২০ মে, ২০২২ ৭:১২ অপরাহ্ণ
নাগরিক ভাবনা, অ্যাডভোকেট আবু মহী উদ্দীনঃ পৃথিবীর কোন দেশে ঘটনাটি ঘটেছে কিনা জানা নাই। সরকার প্রধান বলেছেন মুজিব বর্ষে দেশের কোন মানুষ গৃহহীন থাকবেনা। বিষয়টি আকর্ষনীয় ঘোষণার মধ্যে সীমাবদ্ধ নাই। আগে তো কয়েক লাখ বাড়ী দেয়া হয়েছে। ঈদের সময় সেই আদিকাল থেকে গরীব নিরন্ন মানুষের পরিবারে কিছু টাকা , ফেতরা , সেমাই চিনি , কিছু কাপড় চোপড় দেওয়া হতো। কিছুদিন আগে পর্যন্ত মাইকিং করে জাকাতের কাপড় বিতরণ হতো এবং অবধারিতভাবে কিছু সহায় সম্বলহীন মানুষের প্রান হানি ঘটতো।

এসবের অধিকাংশের আয়োজক থাকতেন রাজনীতিবীদ বা সম্ভাব্য রাজনীতিবীদ। সুখের কথা এবারে এরকম কোন আয়োজন বা প্রানহানির ঘটনা ঘটেনি। এবারে ঈদের আগে দেশের ৩৩ হাজার গৃহহীন পরিবারকে তৈরি করা বাড়ী উপহার দেওয়া হয়েছে। এরা দীর্ঘদিন ধরে গৃহহীন , সারা জীবনে কোন ঘর তারা তৈরি করতে পারতো এ সম্ভাবনা খুব যে ছিল তা নয়। গৃহহীনরা তাদের ভবিতব্য মেনে নিয়েই অন্যের দয়া দাক্ষিন্ন নিয়েই এই মানুষরা জীবন কাটিয়ে দিতো।
যারা রাজনীতি করেন , তাদের পরামর্শ দেওয়া আমাদের সাজেনা। তবে যারা পেশাদার রাজনীতিবীদ , তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য হলো ‘জনসাধারণ’ নাম ধারীদের উপকার করা। তাই যদি হয় সরকারের তরফ থেকে তৈরি বাড়ী উপহার পাওয়া একজন গৃহহীনের কাছে কতটা প্রশান্তির এটা ভাষায় ব্যক্ত করা প্রায় অসম্ভব। কত মানুষ কেঁদেছেন খুশীতে। সরকারের অনেক ভুল ক্রুটি থাকতে পারে , অনেক সমালোচনা করা যেতে পারে, তবে বাড়ী করে দেওয়া দুনিয়াতে বিরল। যেটা করা হয়েছে সেটাকে ছোট করে দেখার কি সুযোগ আছে। যে সব বিরোধী রাজনৈতিক দল নিয়মিত সরকারের পতন ঘটাচ্ছে , গদি থেকে টানিয়ে নামাচ্ছে , সরকার পতনের দিনক্ষন করছে , তা আপনারা করতেই পারেন।
কিন্তু গৃহহীনদের বাড়ী দেওয়া এটা কি অসর্মনযোগ্য কোন কাজ ? যদি এরকম হতো আপনারা তাদের কাছে আপনাদের সামর্থ অনুসারে ঈদের উপহার হিসাবে কিছু সেমাই চিনি নিয়ে দিয়ে তাদের বলতেন বর্তমান সরকার বাড়ী দিয়েছে , আমাদেরতো এখন ক্ষমতায় নাই, আমরা প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করতে পারলে আরো ভালো বাড়ী করে দিব। আপনারা যদি বলতেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী একটি করে ঘর দিয়েছেন , আমরা প্রধানমন্ত্রী তৈরি করতে পারলে ২টি করে ঘর করে দিব। প্রধানমন্ত্রী একতলা বাড়ী দিয়েছেন আমরা দুতলা বাড়ী করে দিব। এটা যদি ভালো কাজ হয়ে থাকে , তাহলে সেটার স্বীকারোক্তি না দিলে তারা ভাববে বিরোধী দল ক্ষমতায় গেলে ঘরগুলির ভাড়া নির্ধারণ করবে। বিরোধী রাজনীতির দলগুলোকে মনে রাখতে হবে ,নির্বাচন ছাড়া প্রধানমন্ত্রী করা যাবেনা, মানুষ পছন্দ না করলে করলে ভোট দিবেনা , প্রধানমন্ত্রী বানাতে না পারলে বাড়ী উপহার দেওয়া যাবেনা। আমেরিকা কয়েকজনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এতে খুব খুশী হয়ে ক্ষমতার স্বপ্ন দেখছেন তা দেখতেই পারেন , সমস্যা হলো নির্বাচনে আমেরিকা ভোট দিবেনা ,ভোট দিবে বাংলাদেশের মানুষ , নিষেধাজ্ঞা পাওয়া সেসব কর্মকর্তা হয়তো চাকুরীতে থাকবেনা।
নির্বাচন ছাড়া সরকার পরিবর্তন হবেনা , ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের পরিস্থিতির আশায় থাকবেননা। সাধারন মানুষের পাশে দাঁড়ান , তাদের নাড়ী দেখতে শিখুন , বিবৃতি আর সংবাদ সম্মেলন করে কর্মীদের চাঙ্গা রাখার চেষ্টা চালানো যাবে তবে তারও একটা সীমা আছে, কর্মীরা যথেষ্ট বুদ্ধিমান। দেশের মানুষের কথা ভাবুন তাদের জন্য রাজনীতি করুন। এটা আমাদের পরামর্শ নয়, আমাদের অনভুতি। রাজনীতি যদি দেশের মানুষের জন্য হয় তাহলে সরকারের ভালো কাজের স্বীকৃতি দিতেই হবে। বিরোধী দলের কাছ থেকে ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্যতা কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হয়েছে। দিননা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।