admin || মুক্ত কলম সংবাদ
প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারি, ২০২০ ১২:৪৪ অপরাহ্ণ
সিলেটের মৌলভীবাজার জেলাব্যাপী সর্বস্তরের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে মৌলভীবাজার জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। শ্রীমঙ্গল ট্রাক, ট্যাংক লরি ও কাভার্ডভ্যান চালক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে এ ধর্মঘট। বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার জন্য জেলাব্যাপী সর্বস্তরের পরিবহন ধর্মঘট পালন করবেন তারা। সংগঠনটির পক্ষ থেকে বুধবার দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত জেলা সদরসহ সবকটি উপজেলায় দফায় দফায় মাইকিং করে এ কর্মবিরতি পালনের ডাক দেওয়া হয়। সংগঠনের নেতারা জানান, গত সোমবার মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সুপার বরাবর সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রীমঙ্গল ট্রাক, ট্যাংকলরি ও কাভার্ডভ্যান চালক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রশাসনকে সময় বেঁধে দেন। শ্রীমঙ্গল থানায় তাদের দেওয়া লিখিত অভিযোগ আমলে নেওয়ার দাবি জানান। বেঁধে দেওয়া এ সময়ের মধ্যে প্রশাসন থেকে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।
গত ১ জানুয়ারি প্রতিপক্ষ একটি সংগঠনের ড্রাইভার খায়রুজ্জামান কামালের নেতৃত্বে তার ১০ থেকে ১২ জন সহযোগী মিলে শ্রীমঙ্গলে ট্রাক, ট্যাংকলরি ও কাভার্ডভ্যান চালক শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর চালায়। এতে লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধন হয়। ঘটনায় পর দিন সংগঠনের সহসভাপতি মিজানুর রহমান মানিক বাদী হয়ে শ্রীমঙ্গল থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও তা নথিভুক্ত করা হয়নি এবং আসামিও গ্রেপ্তার হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্যসচিব আজাদুর রহমান অদুদ বলেন, প্রশাসন আমাদের কোনো দাবি মানেনি। আমরা অপেক্ষা করে সারা জেলায় ধর্মঘটের মাইকিং বের করেছি। দাবি আদায় করতে ধর্মঘটে যাওয়া ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো রাস্তা নেই। তিনি অভিযোগ করেন, ড্রাইভার কামাল বিগত কিছুদিন ধরে সংগঠনের বিরুদ্ধে নানা অপতৎপরতা চালিয়ে আসছিল। তিনি বিএনপি উপজেলা কমিটির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক পদে রাজনীতি করছে। ইদানীং বিএনপির রং পাল্টিয়ে সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের নাম ভাঙিয়ে সাধারণ ড্রাইভারদের কাছে চাঁদা চায়। তার এহেন কর্মকাণ্ডে সাধারণ শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ। সে ও তারা সহযোগীরা শ্রমিক ইউনিয়নের অফিসে হামলা ও ভাঙচুর করেছে।
জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া আহমেদ জানান, কামাল নামের কেউ শ্রমিক লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। এমনকি পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে শ্রমিক লীগের কেউ হামলা চালায়নি। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের শ্রীমঙ্গল উপজেলার সভাপতি খায়রুজামান কামাল এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, একটি চক্র আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট ঘটনা সাজিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। হামলার ঘটনার দিনের শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসের আশপাশের দোকানপাটের ভিডিও ফুটেজ দেখলেই পরিষ্কার হবে কারা এই হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে।
শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান বলেন, ধর্মঘট ডাক দেয়ার বিষয়ে জেলা পরিবহন নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলার জন্য চেষ্টা করছি। শ্রমিক পরিবহনের অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগ প্রসঙ্গে শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুছ ছালেক বলেন, ঘটনার ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে মামলা নেওয়া হয়নি। কারণ হলো তারা নিজেরাই নিজেদের অফিস ভাঙচুর করেছে।