আবুল কাশেম, ভোলা জেলা প্রতিনিধি: অসাংবিধানিক বিবাহবাদ ও অসাংবিধানিক জন্মবাদের বাংলাদেশের সর্বাধিক খ্যাতিমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের নির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট নুরুল হক নুরের উপর তার জন্মভূমি পটুয়াখালীর হামলা পুরো দক্ষিণবঙ্গের জাতীয় ও স্থানীয় উন্নয়নকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
সম্প্রতি ভিপি নুরের উপর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সন্ত্রাসীদের নেতৃত্বে অসভ্যাচারী হামলার প্রতিবাদে দক্ষিণ বাংলাদেশের সবগুলো জেলাসহ সারাদেশে বিএনপির প্রতি নিন্দার ঝড় উঠেছে। ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, বিএনপির দেওয়া আশীর্বাদের চিঠি এখন আমাদের জন্য অভিশাপে পরিণত হয়েছে। এই চিঠির কারণেই স্থানীয় পর্যায়ে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটছে।
শুক্রবার (১৩ জুন, ২০২৫ ইং) বিকেলে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা রেস্ট হাউজের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির মিত্র হিসেবে তাদের পাশে দাঁড়ানো সত্ত্বেও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও দমনপীড়ন চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে নুরুল হক নুর বলেন, গতকাল (বৃহস্পতিবার) গলাচিপা ও দশমিনার বিভিন্ন এলাকায় আমাদের অফিসে হামলা, ভাঙচুর, মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া এবং নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
কালারাজা, চরকাজল, চরবিশ্বাস ও পাতাবুনিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় আমাদের নেতাকর্মীরা বিএনপির পরিকল্পিত আক্রমনে মারধরের শিকার হয়েছেন। ইতোমধ্যে ১২০ জন আহত হয়েছেন, ১৭টি অফিস ভাঙচুর করেছে, দুটি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে এবং আরও অনেকগুলো মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে। তিনি বলেন, আমি ৫ ই আগস্টের পর যখন প্রথম পটুয়াখালীতে প্রবেশ করি তখন আমখালা ইউনিয়নে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে এই পরিস্থিতির সূচনা করে।
সেই থেকে এখন পর্যন্ত হাসান মামুন এই সাংঘর্ষিক পরিস্থিতিটা তৈরি করে রেখেছে। হাসান মামুনের এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ দু-এক দিনের নয়। বিএনপির অভ্যন্তরীণ একটি চিঠির মাধ্যমেই এই সাংঘর্ষিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। আর এ কারণেই বলেছি, বিএনপির দেওয়া আশীর্বাদের চিঠি এখন অভিশাপে পরিণত হয়েছে। নূর আরও বলেন, আমরা নেতা-কর্মীদেরকে বলেছি, প্রত্যেকটি ঘটনার তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করে মামলা করুন। মামলা করে প্রশাসনের সহযোগিতা চান। অন্যথায় আপনারা অনিরাপদ। গতকাল ঘটনার পরেই আমাদের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
আমরা বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের ভূমিকা দেখেই, আমাদের পরবর্তী করণীয় এবং কর্মকৌশল ঠিক করব। বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে নুর বলেন, আপনারা একটি বড় রাজনৈতিক দল, আপনাদের কাছ থেকে জনগণ অনেক কিছু আশা করে। এই ঘটনায় একটি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। বিএনপির মিত্র হিসেবে ভিপি নূরদেরই এই অবস্থা! তাদের ঠিকভাবে চলাফেরা করতে দিচ্ছে না, অফিস ভাঙচুর করে, অবরুদ্ধ করে রাখে, তাহলে অন্যদের কি হবে? এই প্রশ্ন আজ সাধারণ মানুষের। সংবাদ সম্মেলনে জেলা গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব শাহ আলম সিকদার, উপজেলা কমিটির সভাপতি হাফিজুর রহমান, সদস্য সচিব জাকির হোসেন মুন্সীসহ কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, গত বছরের ২২ অক্টোবর বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি মো. নুরুল হককে (ভিপি নুর) তার সংসদীয় এলাকা পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনে সাংগঠনিক কার্যক্রমে সহযোগিতা করতে পটুয়াখালী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
নুরের উপর হামলার নিন্দায় সারাদেশে বিএনপি মেজর জিয়ার ক্যন্টনমেন্টের বহু সেনা অফিসারের হত্যাকান্ডকে দেশবাসী স্মরণে নিয়ে এসেছে। সবাই বলেছে যে, এই দলটি যখনই সুযোগ পায় তখনই চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি, হামলা-আক্রমন, খুন-জখম, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, অত্যাচার ও নির্যাতন শুরু করে। এই হামলা-আক্রমন, খুন-জখম, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, অত্যাচার-নির্যাতন এর নির্দেশনা যুক্তরাজ্যের লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়ার কাছ থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের মাধ্যমে বাযলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রবাহিত হয়। তাই এই পলাতক ও কুলাঙ্গার তারেক জিয়াকে আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে সাজা প্রদানের প্রয়োজন পড়েছে। বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা গুপ্ত ও পলাতক তারেক জিয়ার গুপ্ত নির্দেশনায় বাংলাদেশের সর্বত্র চুরি, ডাকাতি, খুন, লুটপাট, ধর্ষণ, অপহরণ, পাচার, ছিনিমিনি, হামলা, ভাংচুর, ক্ষয়-ক্ষতি ও নানান অপরাধ কর্মকান্ড করে যাচ্ছে।
গত ২০২৪ ইং সালের ৫ ই আগষ্টের পর হতে এই পর্যন্ত বিএনপি সারাদেশে প্রকাশ্যে ১২৫ জনকে রাজনৈতিকভাবে হত্যা করেছে। আরো অনেক হত্যা করেছে যেগুলোর সাক্ষ্য প্রমাণ প্রস্তুত হয় নাই। সর্বশেষ পটুয়াখালীতে নুরুল হক নুরকে হত্যার উদ্দেশ্যে অবরুদ্ধ করেছে। নুর ও তার গণঅধিকার পরিষদের উপর হামলার প্রতিবাদে মিছিল ও বিক্ষোভের খবর ছড়িয়ে পড়েছে। ছবিতে – বিস্তারিত।
