admin || মুক্ত কলম সংবাদ
প্রকাশিত: ৩০ মে, ২০২৪ ১০:৪৬ অপরাহ্ণ
আব্দুল্লাহ্ আল মামুন,পঞ্চগড় প্রতিনিধি: দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় মামলা দায়েরের পর থেকে গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে এলাকায়। এতে করে পালিয়ে বেড়াচ্ছে সাধারণ মানুষ। পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে প্রায় ৮টি গ্রাম। পুলিশি হয়রানি ও গ্রেফতার এড়াতে উৎকণ্ঠায় পুরুষরা।
সরেজমিনে বুধবার (২৯ মে) দামানীগ্রাম ঘুরে দেখা গেছে কৃষকদের মাঠের বোরো ধান পাকলেও নেই কাটার মানুষ। পুলিশের ভয়ে ধানের জমিতে যাচ্ছে না কেউ।
একই অবস্থা পাশ্ববর্তী দামানিগ্রাম, ছত্রশিকারপুর, বানুর হাট, ধুলাঝাড়িসহ ৮টি গ্রামে। বেশ কয়েকদিন ধরেই কোলাহল নেই এলাকাগুলোতে। দিনের বেলায় কয়েকজন পুরুষের দেখা মিললেও রাতের বেলায় একেবারেই সুনশান নীরবতা। গ্রাম ছাড়া প্রায় চার হাজার পুরুষ।
কথা হয় বৃদ্ধা নারী ফাতেমা খাতুনের সঙ্গে। তিনি সময় মুক্ত কলমকে বলেন, ‘মামলা হয়েছে এই ভয়ে আমার ছেলে দুইটা বাড়িতে থাকতে পারছে না। কোথায় যাচ্ছে কিছুই জানিনা, আমার খুব দুঃখ লাগে। আমার আর কিচ্ছু নাই, গরিব মানুষ কি করবো এখন জানি না। আমরা খুব আতঙ্কে আছি।
একই কথা বলেন নুরেজা বেগম ও সুমিত্রা রানী নামে আরো দুই নারী। তারা মুক্ত কলমকে বলেন, ‘নির্বাচনের দিন যে হামলা-ভাঙচুর হয়েছে ওখানে এলাকার লোকের পাশাপাশি বাইরের এলাকার লোকজন ছিল। আমাদের গ্রামের লোকজন এই কাজ করে নাই। এখন তো আমাদের ওপরে দোষ আসতেছে। একটা যদি গাড়ি যায় ভয়ে পালায় বাচ্চারাও। এখন ভয়ে গ্রামের বাচ্চারাও বাইরে যেতে চায় না। আমরা একটা সমাধান চাই। এভাবে পালায় আর কয়দিন থাকবো।’
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশের ভয়ে সব পুরুষ গ্রামছাড়া হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। মাঠের পাকা ধান এক সপ্তাহের মধ্য কাটতে না পারলে সব ধান নষ্ট হয়ে মাটিতে পড়ে যাবে। কতিপয় কিছু লোকের জন্য ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের দিন কাটাতে হচ্ছে ভয়ে। প্রশাসনের কাছে আমার দাবি যে নিরীহ মানুষকে গ্রেফতার না করে ছবি-ভিডিও দেখে মূল অপরাধীদের যেন গ্রেফতার করা হয়।’
দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার ইফতেখারুল মোকাদ্দেম বলেন, ঘটনার পর অজ্ঞাতনামা ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যারাই এই হামলায় সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
পঞ্চগড় পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা মুক্ত কলমকে বলেন, মামলার কোনো নিরীহ লোককে গ্রেফতার বা হয়রানি করা হবে না। আমরা ফুটেজ ও ছবি দেখে আসামিদের শনাক্ত করছি। তবে যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত না তাদের ভয়ের কিছু নেই।
উল্লেখ্য, গত ২১ মে রাতে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ভোটকেন্দ্রে হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরদিন দামানীগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার গোলাম আজম বাদী হয়ে দেবীগঞ্জ থানায় অজ্ঞাত ৫০০- ৬০০ জনের নামে মামলা করলে সাত জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।