আমির হোসেন,সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলায় নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে কাজ শেষে রাতে বাড়ি ফেরার পথে পূর্ব বিরোধের জের ধরে শফিকুল ইসলাম শফিক(২৮) নামের এক পল্লী চিকিৎসককে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে।
প্রতিপক্ষ বড়দল দক্ষিণ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলাই মিয়া তার ভাতিজা এনামুল হকসহ তার লোকজন। এ সময় তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে আলাই মিয়া ও তার লোকজন পালিয়ে যায়। পরে পল্লী চিকিৎসা শফিকুল ইসলাম শফিককে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার অবস্থা আশঙ্কা জনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।
আহত যুবক পল্লী চিকিৎসা শফিকুল ইসলাম শফিক উপজেলার বড়দল দক্ষিণ ইউনিয়নের লেদারবন গ্রামের মৃত জুনাইদ মিয়ার ছেলে। শফিকুল ইসলাম শফিক বর্তমানে সিলেট উসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আশঙ্কা যেন কবর অবস্থায় চিকিৎসাধী রয়েছে।
এ ঘটনাটি ঘটেছে গত ৭ মে বুধবার রাত সাড়ে ৯ টার সময় ট্যাকেরঘাট-লেদারবন গ্রামের যাওয়ার রাস্তার হাফানিয়া জামে মসজিদের সামনে।এ ঘটনায় গতকাল ৮ মে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় আনন্দ বাজারে পুরান খালাশ গ্রামের আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী সাবেক মেম্বার মোঃ অলি মিয়া(৫০), মোঃ আলাই মিয়া সরদার (৪৮)এর ভাতিজা, খলিল মিয়ার ছেলে এনামুল হক(৩০) এর দ্রুত গ্রেপ্তার পূর্বক বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে এলাকাবাসী।
এ সময় মানববন্ধনে আওয়ামী সন্ত্রাসী আলাই মিয়া ও তার ভাতিজা এনামুল তাদের লোকজন এর আগেও শফিকুল ইসলাম শফিকে প্রাণে মারার জন্য তার বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। এবং ট্যাকেরঘাট বাজারে মারধর করে গুরুতর আহত করে। শফিকুল ইসলাম শফিক আইনের দারস্থ হলেও আলাই মিয়া ও তার ভাতিজা এনামুলের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম ওরফে ( পিন্টু মিয়া) ৩ নং বড়দল দক্ষিণ ইউনিয়ন যুবলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ায় এবং তাদের টাকাপয়সা থাকায় তখন তাদের কিছুই হয়নি।
এখন আর আওয়ামী লীগ নাই আমার এর সুষ্ঠু বিচার চাই। এই আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য জোর দাবি জানাই।এ সময় মানববন্ধন বক্তব্য রাখেন,দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য ইয়াকুব আলী, ৩নং বড়দল দক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল হান্নান মুন্সি, নুর মিয়া প্রমুখ।
এ ঘটনায় পল্লী চিকিৎসা শফিকুল ইসলাম শফিক এর মা বাদি হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার পুরানখালাস গ্রামের মৃত মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে খলিল মিয়া (৫৫), অলি মিয়া (৫০), আলাই মিয়া (৪৮) খলিল মিয়ার ছেলে শহিকুল মিয়া (৩২), এনামুল মিয়া (৩০), শরীফুল মিয়া (২৮), রেখাতুল মিয়া (২৫) সহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে ৪/৫ জনকে অজ্ঞাত রেখে একটি মামলা দায়ের করে।
এলাকাবাসী ও থানায় অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, পল্লী চিকিৎসা শফিকুল ইসলাম শফিকের পরিবারের সাথে একই ইউনিয়নের খালাশ গ্রামের ওয়াড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সন্ত্রাসী আলাই মিয়া সরদার তার ভাই সাবেক মেম্বার অলি মিয়া, ভাতিজা, খলিল মিয়ার ছেলে এনামুল হকের বিরোধ চলছিল। এরই জের ধরে গত ৭ মে শফিকুল ইসলাম শফিক সীমান্ত সংলগ্ন লাকমা বাজারের নিজ ঔষধের ফার্মেসী থেকে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। পার্শ্ববর্তী ফানিয়া জামে মসজিদের সামনে আসা মাত্রই রাত সাড়ে ৯ টার সময় পূর থেকে সন্ত্রাসী আলাই মিয়া সরদার তার ভাই অলি মিয়া, ভাতিজা, খলিল মিয়ার ছেলে এনামুল হকসহ ২৫/৩০ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ হাতে দা, রামদা, লোহার রড, লাঠি নিয়া মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে।
এ সময় কিছু বুঝে উঠার আগেই সন্ত্রাসী এনামুল তার হাতে থাকা রাম দা দিয়ে শফিকুল ইসলামকে মাথা,গলা,মুখসহ সারা শরীরে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এ সময় শফিকুল ইসলাম শফিক জীবন বাঁচাতে চিৎকার শুরু করলে স্থানীয় লোকজন ঘর থেকে বেড়ি এগিয়ে আসলে তারা পালিয়ে যায়। পরে শফিকুল ইসলামকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
তার অবস্থা আশঙ্কাজালক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।এর সত্যতা নিশ্চিত করে তাহিরপুর থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন সংবাদকে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগে ভিত্তিতে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।