মিরু হাসান || মুক্ত কলম সংবাদ
প্রকাশিত: ৩ নভেম্বর, ২০২৫ ৯:৩৮ অপরাহ্ণ
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে আলোচিত কাফি হত্যা মামলার এক আসামীর কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রেখা খানমের বিরুদ্ধে। উপজেলার সহলাপাড়া গ্রামের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র কাফি খন্দকার (৮) হত্যা মামলাটি ইতোমধ্যে ব্যাপক আলোচিত হয়েছে। নিহত কাফি স্থানীয় সঞ্চয় খন্দকার ও উম্মে কুলসুমের একমাত্র সন্তান।
সে নশিপুর দৌলতগাজী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। সূত্র জানায়, ১৮ এপ্রিল কাফি নিখোঁজ হওয়ার নয় দিন পর ২৬ এপ্রিল সহলাপাড়া গ্রামের একটি পরিত্যক্ত পুকুরের কচুরিপানার নিচ থেকে তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওইদিন কাফির বাবা ইকবাল হোসেন সঞ্জয় স্থানীয় সাংবাদিক ও সোশ্যাল মিডিয়ায় বিলাপ করতে করতে চারজন সন্দেহভাজনের নাম প্রকাশ করেন আলম হোসেন, কলম, আবুল হোসেন ও সবুর। পরে তাদের নাম বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় এবং তারা পলাতক হন। কাফির বাবা বাদী হয়ে ক্ষেতলাল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করলে মামলাটি বর্তমানে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) তদন্ত করছে।
এ পর্যন্ত নয়জনকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হলেও আটজন জামিনে মুক্ত হয়েছেন। স্থানীয় সূত্র জানায়, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত আবুল হোসেন আত্মগোপনে ছিলেন। গত ২৮ অক্টোবর সন্ধ্যার আগে বগুড়ার দুপচাচিয়া উপজেলার দাইয়ুমপুর এলাকায় জনতা তাকে আটক করে। গণধোলাই চলাকালে কাফির বাবা সঞ্চয় খন্দকার ঘটনাস্থলে গিয়ে আবুলকে উদ্ধার করে মোটরসাইকেলে করে নিয়ে যান। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা ও কিছু অর্থ দিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানা যায়। ৩১ অক্টোবর শুক্রবার সহলাপাড়া গ্রামে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে অভিযুক্ত আবুল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আমি নির্দোষ। সঞ্জয় আমার নাম বলার পর থেকে পালিয়ে ছিলাম। তখন আমার স্ত্রী ও ছেলে বিএনপি নেত্রী রেখার সঙ্গে যোগাযোগ করে। তিনি বলেন, পুলিশ ধরবে না, মামলা থেকেও অব্যাহতি মিলবে-তবে এর জন্য দেড় লাখ টাকা লাগবে। পরে ৮০ হাজার টাকায় রফাদফা হয়।
আমি তাকে ৬৫ হাজার টাকা দিই, বাকি ১৫ হাজারের জন্য তিনি বারবার ফোন দেন। এই বক্তব্যের ভিডিও কল রেকর্ড প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা খন্দকার এলিন বলেন,কাফি হত্যার পর সঞ্জয় নিজেই সন্দেহভাজনদের নাম বলেছিলেন। পরে দেখা গেল তিনি নিজেই তাদের রক্ষা করছেন। জনতা আবুলকে চিনে ফেললে মারধর করে, কিন্তু সঞ্জয় এসে মোটরসাইকেলে করে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।” এ বিষয়ে কাফির বাবা ইকবাল হোসেন সঞ্জয় খন্দকার বলেন,“আবুলের ওপর আমার সন্দেহ ছিল। কিন্তু তদন্তে তার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। অভিযুক্তকে মুক্তি দেওয়ার প্রশ্নে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অন্যদিকে, জেলা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রেখা খানমের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, কে এসব বলেছে, প্রমাণসহ আসবেন। না হলে আপনার বিরুদ্ধে মামলা ও সংবাদ সম্মেলন করব। উল্লেখ্য, কাফি হত্যা মামলা জয়পুরহাট জেলায় ব্যাপক আলোচিত একটি মামলা। এটির তদন্ত এখনো চলমান।