admin || মুক্ত কলম সংবাদ
প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ১:২৭ অপরাহ্ণ
চীনে করোনার সংক্রমণ আরও বেড়েছে । নতুন করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রভূমি চীনের হুবেই প্রদেশে নতুন রোগীর সংখ্যা তিন দিন কমার পর ফের বাড়তে শুরু করেছে, সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭৭৫ জনে। এ পরিস্থিতিতে ভাইরাসের বিস্তার কমাতে হুবেই প্রদেশে চলাফেরার ওপর নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করেছে চীন সরকার।এই হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকেই গত বছরের শেষে নভেল করোনাভাইরাস ছড়াতে শুরু করে। দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে আসার কোনো লক্ষণ এখনো দেখা যাচ্ছে না।
চীনে বিপুলসংখ্যক শিল্পকারখানা বন্ধ থাকায় বিশ্ব অর্থনীতিতেও অস্থিরতা বাড়ছে, জাপান আর সিঙ্গাপুর পড়েছে মন্দার ঝুঁকিতে। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির মূল ভূখন্ডে রোববার আরও ২ হাজার ৪৮ জনের শরীরে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, আগের দিন নতুন রোগীর সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৯ জন। সব মিলিয়ে চীনে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭০ হাজার ৫৪৮ জনে। আর অন্তত ২৬টি দেশে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৭১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। রোববার চীনে মোট ১০৫ জনের মৃতু্য হয়েছে নতুন এ করোনাভাইরাসে। এর মধ্যে হুবেই প্রদেশেই মারা গেছেন ১০০ জন। তাতে চীনের মূল ভূখন্ডে নতুন করোনাভাইরাসে মৃতু্যর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১৭৭০ জনে। প্রতিবেশী তাইওয়ানে রোববার প্রথম এ ভাইরাসে আক্রান্ত একজনের মৃতু্য হয়েছে। চীনের মূল ভূখন্ডের বাইরে এর আগে ফ্রান্স, হংকং, ফিলিপিন্স ও জাপানে চারজনের প্রাণ গেছে নভেল করোনাভাইরাসে। সব মিলিয়ে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ১৭৭৫ জনে।
চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত ১০ হাজার ৮৪৪ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। আর চীনের বাইরে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ইতোমধ্যে পাঁচশ ছাড়িয়ে গেছে। তাদের বেশিরভাগই চীন থেকে সংক্রমণ নিয়ে অন্য দেশে গেছেন। ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে উহানসহ কয়েকটি শহর গত জানুয়ারি থেকেই কার্যত অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। রোববার হুবেই প্রদেশে যানবাহন চলাচলের ওপর নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। জরুরি সেবার গাড়ি ছাড়া অন্য কোনো ধরনের যানবাহন বের না করতে বলা হয়েছে বাসিন্দাদের। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কলকারাখানা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এদিকে করোনাভাইরাসের কারণে জাপানের সাগরে আলাদাভাবে নোঙর করে থাকা প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসের মার্কিন যাত্রীদের দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
সোমবার সকালে দুটি বিশেষ উড়োজাহাজে তাদের নিয়ে টোকিওর হানেদা বিমানবন্দর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে। তিন হাজার ৭০০ আরোহী নিয়ে ওই প্রমোদতরী গত ৩ ফেব্রম্নয়ারি থেকে ইয়োকোহামা বন্দরে নোঙর করে আছে পর্যবেক্ষণের জন্য। হংকং থেকে ওঠা এক চীনা যাত্রীর মাধ্যমে সেখানে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত ডায়মন্ড প্রিন্সেসের ৩৫৫ যাত্রীর শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে বলে জাপান সরকার জানিয়েছে। ওই প্রমোদতরীতে ৪০০ মার্কিন যাত্রী ছিলেন। তাদের মধ্যে যারা আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের জাপানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাকি তিন শতাধিক যাত্রী এখন দেশে ফিরছেন।
চীনফেরত শিক্ষার্থীকে হবিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে চীন থেকে আসা এক শিক্ষার্থীকে হবিগঞ্জে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় ওই ছাত্রকে হাসাপাতালে ভর্তি করা হয় বলে হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ছেলেটির বাড়ি জেলা শহরের শায়েস্তানগর এলাকায়। সিভিল সার্জন বলেন, চীনফেরত এক শিক্ষার্থী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে তাকে হাসপাতালে ভর্তির পর নিবিড় পর্যবেক্ষণে পাঠানো হয়। সে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিনা তা পরীক্ষার জন্য তার রক্তের স্যাম্পল ঢাকায় পাঠানো হবে। তবে চীনফেরত ওই শিক্ষার্থীর মধ্যে এ ভাইরাসের তেমন কোনো লক্ষণ নেই বলে জানান এ চিকিৎসক।